ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইন অনুষদভুক্ত আল-ফিকহ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের নাম সংস্কারের দাবিতে বিভাগের সামনে অবস্থান কর্মসূচি করেছে শিক্ষার্থীরা। শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় মীর মশাররফ হোসেন ভবনের নিচতলায় এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এসময় তারা বিভাগের নাম ‘আল-ফিকহ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ’ পরিবর্তন করে ‘আল-ফিকহ এন্ড ল’ নামকরণের দাবি জানায়। এর আগে দুপুর দেড়টায় বিভাগের সভাপতির কক্ষে এ বিষয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্রায় দুই ঘন্টা আলোচনা হয়। আলোচনায় কোনো সমাধান না হওয়ায় দাবি আদায়ে বেলা সাড়ে তিনটায় বিভাগের সামনে বসে পড়েন তারা।
জানা যায়, বিগত বছরের ২রা সেপ্টেম্বর আল-ফিকহ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষকদের কাছে বিভাগ সংস্কারের ১৭ দফা দাবি পেশ করে। যার মধ্যে বিভাগের নাম সংস্কার অন্যতম দাবি ছিল। তখন শিক্ষকদের পক্ষ থেকে অতিদ্রুত এসব দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলেও বিগত নয় মাসে দৃশ্যত কোনো পরিবর্তন হয়নি বলে দাবি শিক্ষার্থীদের। তাদের অভিযোগ, বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে শিক্ষকরা বিভাগের নাম সংস্কারের দাবি বিগত একাডেমিক কমিটির সভায় তোলেননি। আসন্ন একাডেমিক কমিটির সভায়ও তারা নাম সংস্কারের বিষয়টি তুলতে চাচ্ছে না। এজন্য অনতিবিলম্বে এ বিষয়ে বিভাগ থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে আসন্ন একাডেমিক কমিটিতে নাম সংস্কারের বিষয়টি তুলতে আমরা একাট্টা অবস্থানে আছি।
এদিকে নাম সংস্কারের দাবিতে আজ শিক্ষকদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পরেও সমাধান না মেলায় বিকেল সাড়ে ৩টায় বিভাগের সামনে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা বিভাগের নাম পরিবর্তনের এক দফা দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। শিক্ষকদের আশ্বাসে প্রায় দেড় ঘন্টা পর আন্দোলন স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা।
এসময় বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ নাজিমুদ্দিন বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের চাওয়া অনুযায়ী আসন্ন একাডেমিক কমিটির সভায় নাম সংস্কারের বিষয়টি উত্থাপন করবো। আগামীকালই এ বিষয়ে রেজুলেশন করা হবে। আমরাও বিভাগের নাম সংস্কার চায়।
বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নাছির উদ্দীন বলেন, আমি এ বিষয়ে অনেক আগে থেকেই কাজ করে যাচ্ছি। বিভাগের কোনো বিষয় সিন্ডিকেট সভায় পাঠাতে হলে সকল শিক্ষক ঐকমত থাকতে হয়। কিছুদিন আগে আমি এই বিষয়ে সবাইকে ডাকলেও কয়েকজন শিক্ষক এতে সাড়া দেননি। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের পূর্বের দাবিতে দুটি নামের প্রস্তাবনা থাকায় কয়েকজন শিক্ষক এতে দ্বিমত পোষণ করেন। এজন্য তা আর এগোনো সম্ভব হয়নি। এবার শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে একমত এবং বিভাগের নাম ‘আল-ফিকহ্ এন্ড ল’ করার দাবি জানিয়েছে। আশা করি এবার তা সংস্কার করা সহজ হবে।
প্রসঙ্গত, বিভাগটি চালুর পর থেকে বিভাগের নাম ছিল আল-ফিকহ। কিন্তু বিভাগটি আইন অনুষদভুক্ত হওয়ায় এবং এলএলবি ডিগ্রি প্রদান করায় পরবর্তীতে ২০১৭ সালে শিক্ষার্থীরা ফিকহের সঙ্গে ‘ল’ যুক্ত করার দাবি তোলেন। সেসময় দাবি মানা হলেও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তৎকালীন আওয়ামী প্রশাসন ‘ল’ এর পরিবর্তে বিভাগের নামের শেষে ‘লিগ্যাল স্টাডিজ’ যুক্ত করে ‘আল ফিকহ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ’ নামকরণ করেন। এই বিভাগকে দমিয়ে রাখার জন্যই সেসময় এমন ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল বলে অভিযোগ বিভাগটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।
একুশে সংবাদ/এ.জে