বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনায় বিপাকে পড়েছে সমন্বিত গুচ্ছের ‘এ’ ইউনিটের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে আসা ভর্তিচ্ছুরা। শুক্রবার ভর্তি পরীক্ষা শেষে পরীক্ষার্থীদের তথ্য ও স্বাস্থ্য কর্নারে রাখা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বুঝিয়ে দিতে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।
এসময় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী তাদের জিনিসপত্র বুঝে পেতে হেল্প ডেস্কের সামনে হট্টগোল শুরু করে। পরে প্রক্টরিয়াল বডি, পুলিশ, বিএনসিসি ও রোভার স্কাউটসের সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জিনিসপত্র বুঝিয়ে দিতে তিন ঘন্টারও বেশি সময় নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ভর্তিচ্ছু ও তাদের অভিভাবকরা। দূরদূরান্ত থেকে আসা শিক্ষার্থীরা তাদের নির্দিষ্ট সময়ের গাড়ি ধরতে পারেননি। এতে তারা কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দুষছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্তরা একে অপরের উপর এর দায় চাপাচ্ছেন।
জানা যায়, গুচ্ছের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ইবি কেন্দ্রে ৮ হাজার ৮৬০ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র প্রধান ফটকের ভেতরে তথ্য ও স্বাস্থ্য কর্নারে টোকেনের বিনিময়ে জমা রাখা হয়। তবে শিক্ষার্থীদের দেওয়া টোকেন ও জিনিসপত্রের সঙ্গে থাকা টোকেনের নাম্বার অস্পষ্ট হওয়ায় সঠিক মালিককে তার জিনিসপত্র বুঝিয়ে দিতে ব্যর্থ হয় দায়িত্বরত বিএনসিসি ও রোভার স্কাউটস সদস্যরা। এতে ভর্তিচ্ছুদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কয়েক হাজার শিক্ষার্থীদের মধ্যে হট্টগোল শুরু হয়। পরে নিরাপত্তার দায়িত্বরতরা পরিস্থিতি সামাল দেয়।
ভর্তিচ্ছুদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনায় উদ্ভূত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে৷ একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের থেকে এধরনের সমন্বয়হীনতা কাম্য নয়। দূরদূরান্ত থেকে আসা পরীক্ষার্থীরা সময়মতো বাস ধরতে পারেনি। মোবাইল ফোন হেল্প ডেস্কে রাখা ব্যাগে থাকায় অনেকে তাদের সঙ্গে আসা অভিভাবকদের খুঁজে পাচ্ছে না। তীব্র গরমে কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এছাড়াও সরেজমিনে অনেকের জিনিসপত্র নষ্ট হতেও দেখা গেছে।
বিএনসিসির সদস্যদের অভিযোগ, প্রথম দিনের পরীক্ষায় স্টিকার টোকেন ছিল না। পরের পরীক্ষার দিনেও পর্যাপ্ত স্টিকার ছিলনা। এছাড়া আজ স্টিকারের নাম্বার অস্পষ্ট ও জায়গার সংকট ছিল। প্রতিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করলেও এবার তাদের সমন্বয়হীনতার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে৷
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান বলেন, এটি আমার দায়িত্ব ছিল না। তাদের জায়গায় সংকটের বিষয়টা আমাকে কেউ জানায়নি। এটা শোভাবর্ধন কমিটির দেখার কথা ছিল।
ভর্তি পরীক্ষার শোভাবর্ধন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আলীনূর রহমান বলেন, আমাদের শুধুমাত্র ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ সোর্ন্দয্য বর্ধনের দায়িত্ব ছিল৷ নিরাপত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এসব বিষয় প্রক্টরিয়াল বডির দেখার কথা। এটি আমাদের কোনো বিষয় ছিল না৷ আর তাদের জায়গা সংকুলানের বিষয়েও কেউ আমাকে কিছু জানায়নি।
এদিকে টোকেন ছাপানোর দায়িত্বে ছিলেন রোভার স্কাউট গ্রুপের সম্পাদক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। এ বিষয়ে জানতে তার সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
একুশে সংবাদ/ইবি.প্র/এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :