AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

দেশকে গর্বিত করলেন এনায়েত-ইয়ামিন


Ekushey Sangbad
ক্রীড়া প্রতিবেদক
১০:৪৫ এএম, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
দেশকে গর্বিত করলেন এনায়েত-ইয়ামিন

খেলোয়াড়ী জীবনে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে অসংখ্য পুরস্কার-সম্মাননা প্রাপ্তির রেকর্ড রয়েছে জাতীয় দলের এক সময়ের নাম্বার ওয়ান তারকা শাটলার এনায়েত উল্লাহ খানের। বাংলাদেশ জাতীয় দল কিংবা পুলিশ টিমের কোচ হিসেবেও দারুণ সফল নারায়ণগঞ্জের এই ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়।


সাফল্যের সেই ধারাকে এবার আরো এক ধাপ ওপরে নিয়ে গেলেন। এনায়েত উল্লাহ খানের হাত ধরে বাংলাদেশ প্যারা ব্যাডমিন্টনে ইতিহাস রচনা করল বাংলাদেশ। গত ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ইন্দোনেশিয়ার সোলোতে চলছে ফক্সেস ইন্দোনেশিয়া প্যারা ব্যাডমিন্টন ইন্টারন্যাশনাল টুর্নামেন্ট। আজ ১০ সেপ্টেম্বর পর্দা নামবে আসরের। তবে তার আগেই গতকাল ৯ সেপ্টেম্বর টুর্নামেন্ট থেকে একটি ব্রোঞ্জ পদক জিতে নেয় বাংলাদেশ। ডাবলসে কুয়েতের শাটলার আব্দুল্লাহর সঙ্গে জুটি বেঁধে বাংলাদেশকে এই পদক এনে দেন এনায়েত উল্লাহর শিষ্য মো. ইয়ামিন। এসএইচ-৬ ক্যাটাগরির প্যারা শাটলার ইয়ামিন টুর্নামেন্টের এককেও অংশ নিয়েছিলেন। তবে কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে যান তিনি।

 

ইন্দোনেশিয়াতে প্যারা শাটলার শিষ্য ইয়ামিনের সাফল্যের পেছনে রহস্যের কথা জানিয়ে এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘ইয়ামিন অনেক পরিশ্রমী একজন শাটলার। চায়ের দোকানে কাজ করার পাশাপাশি নিয়মিত অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছে সে। জাতীয় টুর্নামেন্টগুলোতে দারুণ করছে। ইন্দোনেশিয়াতে আসর আগে ইয়ামিন ২০২২ সালে দু’বার বাহরাইনে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে এবং একবার জাপানে ওয়ার্ল্ড প্যারা চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। ইয়ামিন যেহেতু পূর্ব থেকেই বড় বড় দেশের শাটলারদের সঙ্গে খেলছে; সেহেতু আমার বিশ্বাস ছিল ইন্দোনেশিয়াতে সে ভালো কিছুই করবে। তবে এতটা ভালো করবে আশা ছিল না। কারণ ডাবলসে ইন্দোনেশিয়ার মতো শক্ত প্রতিপক্ষ ছিল। এছাড়া পেরু, মালয়েশিয়া, কুয়েতের মতো দেশের শাটলাররাও এতে অংশ নিয়েছেন। ইয়ামিনের এমন সাফল্য শুধু আমি কেন পুরো বাংলাদেশ গর্বিত।’

বাংলাদেশে এই মুহূর্তে মোট ৬ ক্যাটাগরিতে মোট ১২০ জন প্যারা খেলোয়াড় রয়েছেন। তাদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ন্যাশনাল প্যারা অলিম্পিক বাংলাদেশ (এনপিসি)। এই এনপিসির একজন সদস্য এনায়েত উল্লাহ খান। প্যারা ব্যাডমিন্টন কিংবা অন্য প্যারা ইভেন্টে বাংলাদেশ যে ভালো করছে তার সমস্ত কৃতিত্ব ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এবং এনপিসির সদস্যদের বলে মন্তব্য এনায়েতের।

 

এ ব্যাপারে এনায়েত বলেন, ‘আমরা একজন সুদক্ষ, যোগ্য, ক্রীড়ানুরাগী ক্রীড়ামন্ত্রী পেয়েছি। জাহিদ আহসান রাসেল মহোদয় পাশে আছেন বলেই আমরা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে দেশের বাইরে থেকেও সাফল্য বয়ে আনতে সক্ষম হচ্ছি। আজকে ইয়ামিনের যে সাফল্য তাতে ক্রীড়ামন্ত্রী মহোদয়ের সহযোগিতা না থাকলে সম্ভব হতো না। এর বাইরে আমাদের এনপিসির সম্মানিত মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার মাকসুদুর রহমান স্যার, সালাম স্যার, আমিনুল স্যার, বিগ্রে. ফকরুদ্দিন হায়দার, ভ্যালরিসহ সকল সদস্যের ঐকান্তিক চেষ্টা এবং পরিশ্রমে এগিয়ে চলছে দেশের প্যারা অলিম্পিক কার্যক্রম। আমি সকলের কাছে কৃতজ্ঞ।’

 

পদক জয়ে দারুণ খুশি শাটলার ইয়ামিন। তিনি জানান, ‘এনায়েত স্যার না থাকলে আজ আমি এতদূর আসতে পারতাম না। স্যার নিজের পকেটের টাকা খরচ করে আমাকে এখানে নিয়ে এসেছেন। এর আগেও আমি স্যারের সঙ্গে জাপানে বিশ্ব প্যারা চ্যাম্পিয়নশিপ এবং বাহরাইনে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়েছি। তবে এবার ইন্দোনেশিয়াতে আসার আগে প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি। ১৪টি দেশ এবারের আসরে অংশ নিয়েছে। সেখান থেকে আমি ব্রোঞ্জ পদক জিতেছে। কুয়েতের পার্টনার আব্দুল্লাহকে নিয়ে। এনায়েত স্যারের হাত ধরে সামনে আমি প্যারা অলিম্পিকে নাম লেখাতে চাই। তার জন্য যত কষ্ট করতে হয় আমি সেই কষ্ট করার জন্য প্রস্তুত আছি। ২০২৪ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ব প্যারা অলিম্পিক। আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট গুলোতে ভালো খেলে আমি অলিম্পিকে সরাসরি অংশ নিতে চাই। আমার লক্ষ্য এখন সেটাই।’

 

যে কোনো ক্রীড়া এবং ক্রীড়াবিদের এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে স্পন্সরের ভূমিকা অপরিসীম। প্যারা ব্যাডমিন্টনও এর ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু এখানে স্পন্সররা এগিয়ে আসছেন না। এতে কিছুটা হলেও হতাশ এনায়েত উল্লাহ।

 

এ নিয়ে এনায়েত জানান, ‘আমরা এক সময় শাটলার ছিলাম। স্পন্সরের সহযোগিতায় জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক আসরগুলোতে খেলার সুযোগ পেয়েছি। দেশের জন্য সাফল্য বয়ে এনেছি। প্যারা ব্যাডমিন্টনও দারুণ একটা সম্ভাবনাময় ইভেন্ট। এখানে স্পন্সররা এগিয়ে আসলে খেলাটি আরো প্রসারিত হবে; অনেক প্যারা শাটলারের স্বপ্ন পূরণ হবে। তাদেরকে অন্যের দ্বারস্ত হয়ে জীবন কাটাতে হবে না। আমি স্পন্সরদের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি এই খেলাটিকে এগিয়ে নিতে আপনার সহযোগিতার হাত বাড়ান।’

উল্লেখ্য, নিজের পকেটের টাকা খরচ করে ইন্দোনেশিয়ার এই আসরে ইয়ামিনকে নিয়ে এবার অংশ নিয়েছেন এনায়েত।

 

বাংলাদেশ প্যারা ব্যাডমিন্টন দল নিয়ে অনেকদিন ধরেই কাজ করছেন এনায়েত উল্লাহ খান। সেই ২০১৮ সাল থেকে। শুরুতে এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এনায়েত এখন প্যারা ব্যাডমিন্টনের সাধারণ সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত। জাতীয় পর্যায়ে তো কাজ করছেনই নিয়মিত; অংশ নিচ্ছেন আন্তর্জাতিক আসরেও।

 

২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো প্যারা ব্যাডমিন্টনে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করে আলোচনার ঝড় তোলেন এনায়েত। এরপর করোনা পরবর্তী সময়ে খেলোয়াড় এবং কোচেস কোর্স আয়োজন করেন। ২০২১ সালে দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হয় প্যারা ব্যাডমিন্টন জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ। চলতি বছরের নভেম্বরে তৃতীয় আসর আয়োজনের ইচ্ছার কথা ইতোমধ্যে জানিয়েছেন দেশের জনপ্রিয় কোচ-শাটলার এনায়েত উল্লাহ খান।
 

একুশে সংবাদ/স ক  

Link copied!