রাজধানীতে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে মাঠে কাজ করছ্যে ট্রাফিক বিভাগ। চালক ও পথচারীদের আইন মানাতে নগরীর নানা পয়েন্টে তৎপর তারা। মোহাম্মদপুরে লেন মেনে চলাচল করতে বাধ্য করা হয়েছে বাস-রিকশাকে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে অবৈধ পার্কিং বন্ধেও নিতে দেখা গেছে পদক্ষেপ। তবে ব্যাটারি চালিত রিকশা বন্ধে আইনি জটিলতা দেখছে তারা।
গত বুধবার রাজধানীর বনানীতে বিআরটিএ কার্যালয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ আইন ২০১৭ অধীনে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম বৈঠকে সড়কে বিশৃঙ্খলা নিয়ে ক্ষোভ জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘সড়কে শৃঙ্খলা না আনলে দুর্ঘটনা কখনোই কমবে না। দুর্ঘটনা হলে তো কাউকে কেউ কিছু বলে না। শুনতে হয় আমাকে। কেউ বলে না বিআরটিএ চেয়ারম্যান কী করছে, সবাই আমাকে বলে।’
এর আগের দিন, মঙ্গলবার রাজধানীর আহসান উল্লাহ ইউনিভার্সিটিতে ট্রাফিক সচেতনতামূলক এক সেমিনারে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে অবৈধ গাড়ি পার্কিং বন্ধে বিশেষ অভিযান শুরু হবে।
এর প্রতিফলন দেখা গেল আজ বৃহস্পতিবার। এদিন সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে দেখা যায় পুলিশের তৎপরতা। রাজধানীর বেইলিরোড এলাকায় আগে যেখানে সড়কের অর্ধেক দখল করে গাড়ি পার্কিং করতে দেখা যেতো। বৃহস্পতিবার দেখা যায় পুরো সড়কজুড়েই লাগানো হয়েছে ‘নো পার্কিং’ লেখা ব্যানার। মোহাম্মদপুর এলাকাতেও একই চিত্র দেখা যায়। সড়কের পাশে কোনো গাড়িকেই পার্কিং করতে দেওয়া হচ্ছে না। এতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনের সড়কে অনেকটাই ফিরেছে শৃঙ্খলা। তবে আসাদগেট এলাকায় তা পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি।
রাজধানীর যানজটের একটি বড় কারণ হিসেবে মনে করা হয় স্কুল, কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে অবৈধ গাড়ি পার্কিং। দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা চললেও সমাধান সম্ভব হয়নি।
আসাদগেট এলাকায় একজন অভিভাবক বলেন, ‘প্রতিটি স্কুলে যদি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকে, তাহলে আমাদের জন্য অনেক সুবিধা হয়।’
একজন চালক বলেন, ‘আমরা দৌড়ের উপর থাকি। মামলা–হামলা আমাদের ওপর হয়। স্কুলের ভেতরে প্রচুর জায়গা আছে। আমাদের তো উপায় নেই।’
এর জবাবে পুলিশ বলছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে পার্কিংয়ের ব্যবস্থাসহ নানা বেশকিছু উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। ব্যক্তিগত গাড়িতে শিক্ষার্থী আনা-নেয়া নিরুৎসাহিত করায়ও জোর দিচ্ছে তারা।
তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘ট্রাফিক পর্যায়ের চেয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে একটা ব্যবস্থাপনা জরুরী। এই স্কুলগুলোতে কি পরিমাণ শিক্ষার্থী ভর্তি হলে, এই এলাকার সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হবে না এটা বিবেচনায় আনতে হবে। এটা জরুরী।’
এদিকে রাজধানীতে ব্যাটারি চালিত রিকশা ও অটো চলাচল নিষিদ্ধ হলেও তা মানা হচ্ছে না। রাজধানীর সড়কগুলোতে হরহামেশাই দেখা যায় এ ধরনের যান। দুর্বল ব্রেকিং সিস্টেমের কারণে এই যানবাহনগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবেই বিবেচনা করা হয়।
ডিএমপি বলছে, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার বন্ধে, চার্জিং পয়েন্ট ও গ্যারেজের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। একাজ শেষেই শুরু হবে অভিযান।
মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘ব্যাটারি চালিত রিকশার বিষয়ে আমাদের একটা সমস্যা হলো, আমাদের পর্যাপ্ত ডাম্পিংয়ের জায়গা না থাকার কারণে, আমার পরবর্তী করণীয়টা কি এটাও কিন্তু বিবেচনা করতে হবে।’
পাশাপাশি নো হেলমেট নো ফুয়েল নীতি বাস্তবায়নেও সক্রিয় দেখা গেছে ট্রাফিক বিভাগকে।
একুশে সংবাদ/ই.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :