AB Bank
ঢাকা শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

মহাখালীতে অবৈধ পার্কিং, এলাকাজুড়ে তীব্র যানজট


Ekushey Sangbad
বেলায়েত হোসেন, ঢাকা
০২:৪৬ পিএম, ৪ মে, ২০২৪
মহাখালীতে অবৈধ পার্কিং, এলাকাজুড়ে তীব্র যানজট

রাজধানীতে যানজট একটি অভিশাপের নাম। এই অভিশাপ থেকে মুক্ত নয় রাজধানীর কোন এলাকা। এর মধ্যে কিছু কিছু এলাকা আছে, যেখানে অভিশাপের মাত্রা বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। তার মধ্যে অন্যতম রাজধানীর মহাখালী। এখানে রাস্তার পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে অসংখ্য দূরপাল্লার বাস। অপরদিকে সড়কে যানবাহনেরও চাপ বিস্তর। কিন্তু পাশেই দূরপাল্লার পরিবহনের জন্য রয়েছে বিশাল টার্মিনাল। তবুও প্রধান সড়ককেই অবৈধ পার্কিং হিসেবে ব্যবহার করছেন দূরপাল্লার পরিবহন শ্রমিকরা। এতে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।  

রাজধানীর মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের সামনের প্রধান সড়ক মহাখালী থেকে নাবিস্কো পর্যন্ত রাস্তার দুইপাশে সারিবদ্ধভাবে পার্কিং করে রাখা হয়েছে বিভিন্ন পরিবহনের দূরপাল্লার বাস, যার ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় বাস্তায় চলাচল করা অন্যান্য পরিবহনকে। সৃষ্টি হয় সারা এলাকাজুড়ে তীব্র যানজট।

এ ব্যাপারে পুলিশ বলছে, 

ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে এসব গণপরিবহনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হলেও তারা মানছে না কোনো নিয়ম। ট্রাফিক পুলিশের সদস্যগণ বাস চালকদের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চাইলে শুরু হয় গড়িমসি। শ্রমিক সংগঠনের হস্তক্ষেপের কারণে নেওয়া যাচ্ছে না প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।  

সরেজমিনে দেখা যায়, টার্মিনাল ঘেঁষে সড়কের পাশে অবৈধ পার্কিং করা রয়েছে সারি-সারি বাস। প্রধান সড়কের নাবিস্কো থেকে মহাখালী পর্যন্ত জায়গায় জায়গায় একইভাবে রাখা হয়েছে বাসগুলো। এতে সড়কের একটি লেন প্রায় দূরপাল্লার গণপরিবহনের দখলেই থাকছে। অপর দিকে মহাখালী ইউটার্ন দিয়ে টার্মিনাল থেকে বাস বের হওয়ার সময়ও সড়কে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। টার্মিনালের বিপরীত পাশে বাস দাঁড় করিয়ে তোলা হচ্ছে যাত্রী।

এসময় আরও দেখা যায়, 

সড়কের পাশে দাঁড় করানো অবস্থায় রয়েছে শ্যামলী বাংলা পরিবহন, এনা, সৌখিন এক্সপ্রেস, রাজিব, বিনিময়, একতা, রিফাত পরিবহন, ইমাম, আলম এশিয়া, সোনার বাংলা, ইসলাম পরিবহন, লাবিবা, পিপিএল সুপার, দ্রুতগামী, জলসিঁড়ি, উজান-ভাটি, সম্রাট পরিবহন, অনন্যা পরিবহনসহ আরও বিভিন্ন কোম্পানির একাধিক বাস। এই বাসগুলো টার্মিনালের বাইরে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।  

অপর দিকে ইউটার্নের মধ্যে সড়কে রাখা হয়েছে পুলিশে র‌্যাকার যান। অন্যদিকে সড়কের দুই পাশেই দায়িত্বরত রয়েছে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সদস্যরা। কিন্তু সড়কে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা থাকলেও সড়কের পাশে অবৈধ পার্কিং করতে কোনো দ্বিধা করছেন না পরিবহন শ্রমিকরা। এ যেন মঘের মুল্লুক। সাধারণ মানুষে ভোগান্তি হলে কার বাপে কি?

মহাখালীতে বেশ কিছু হাসপাতাল রয়েছে এর মধ্যে আইসিডিডিআরবি, ডিএনসিসি করোনা হাসপাতাল, ক্যান্সার, বক্ষব্যাধিসহ আরো অনেক হাসপাতাল। যেখানে প্রতিদিন ঢাকা এবং ঢাকার আশপাশ থেকে সেবা প্রার্থীরা সেবা নিতে আসেন, সে সব সেবা প্রার্থীরা রাস্তায় অবৈধ পার্কিংয়ের ফলে জ্যামের কারণে ভোগান্তির শিকার হয়ে থাকেন। বিশেষ করে আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে আসা অ্যাম্বুলেন্সগুলো রাস্তায় পার্কিং করা বাসগুলোর কারণে হাসপাতালে প্রবেশ করতে পারে না, বিধায় অ্যাম্বুলেন্সে থাকা রোগীরা ভোগান্তির শিকার হন। একই অবস্থা দেখা যায় ডিএনসিসি করোনা হাসপাতালেও।

ডিএনসিসি করোনা হাসপাতালের গেটে কর্মরত আনসার সদস্য বিল্লাল হোসেন বলেন, 

‘আমাদের এখানে প্রতিনিয়ত ঢাকার বাইরে থেকে অনেক রোগী আসে কিন্তু গেটের মধ্যে দূরপাল্লার পরিবহন দাঁড় করিয়ে রাখার কারণে এম্বুলেন্সে করে আসা রোগীরা ভিতরে ঢুকতে বাধার সম্মুখীন হন। বিধায় সেবা প্রার্থীরা ভোগেন অসহ্য যন্ত্রণায়। বাসের চালক হেলপারদেরকে কিছু বললেই উল্টো তারা সঙ্গবদ্ধ হয়ে আমাদের উপর তেড়ে আসেন।’

যানজটে ভোগান্তির শিকার বাসের যাত্রী মিজান বলেন, ‘আমি প্রতিনিয়ত মহাখালী থেকে মতিঝিলে আসা-যাওয়া করি। প্রতিদিনই মহাখালী থেকে সাত রাস্তা পর্যন্ত যেতে পোহাতে হয় এই যানজট। এই যানজটের একমাত্র কারণ রাস্তা দুই পাশে রাখা দূরপাল্লার গাড়িগুলো। প্রশাসনের কাছে বিনয়ের সাথে অনুরোধ, তারা যাতে রাস্তার দু-পাশের গাড়িগুলো অন্তত টার্মিনালের ভিতরে ঢুকিয়ে দেন। তাহলে শুধু আমি না হাজার-হাজার মানুষ এর সুফল ভোগ করবে।’

এদিকে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা- 

নাবিস্কো থেকে মহাখালী পর্যন্ত প্রায় ২৫ থেকে ৩০টি তেলের পাম্প রয়েছে, যেখানে সিরিয়াল ধরে গাড়িগুলো তেল নেওয়ার কারণে বিশাল জামের সৃষ্টি হয়। এসব তেলের পাম্পের জন্য বাড়তি কোন জায়গা নেই। তাই গাড়িগুলো সিরিয়াল দিয়ে রাখতে পারে না। সে ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত তারা রাস্তার মধ্যেই এই গাড়িগুলো সিরিয়াল দিয়ে রাখে। বিধায় রাস্তায় ব্যাপক জ্যামের সৃষ্টি হয়।

ঢাকা জেলা বাস মিনিবাস সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সাদিকুর রহমান হিরু একুশে সংবাদ.কমকে বলেন, ‘মহাখালী আন্ত:জেলা বাস টার্মিনালে ধারণক্ষমতার অধিক পরিবহন হওয়ার কারণে মাঝে মধ্যে ড্রাইভারগণ রাস্তায় গাড়ি পার্ক করে রাখেন। 

তবে জনভোগান্তির বিষয়টা আমাদের মাথায় আছে। আমরা সব সময় চেষ্টা করি যাতে রাস্তায় জ্যামের সৃষ্টি না হয়। আমাদের শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে রাস্তায় ভলান্টিয়ার রয়েছেন, তারা সব সময় বাস মিনি বাসগুলোকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিবহনচালক একুশে সংবাদ.কমকে বলেন,

‘টার্মিলানের ভেতরে সব সময় গাড়ি রাখা যায় না। অনেক সময় ভিতরে গাড়ি রাখা গেলেও বের করতে অনেক সময় লেগে যায়। অনেক সময় পুলিশ সদস্যরা গাড়ি সরিয়ে নিতে বলে। কিন্তু তাদের ম্যনেজ করে আমরা বাস রাখি। অনেক সময় পুলিশ মামলা দিয়ে র‌্যাকার লাগিয়ে দেয়।’  

এ বিষয়ে পুলিশ সদস্যরা বলছেন, ‘মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনের সড়কটি অনেক ব্যস্ততম একটি সড়ক। এখানে দূরপাল্লার গণপরিবহন সড়কের পাশে বেশিক্ষণ থাকতে দেওয়া হয় না। আমাদের পুলিশ সদস্যরা দাঁড়িয়ে থাকা বাসগুলোকে দ্রুতই সেখান থেকে সরিয়ে দেন। মাঝে মধ্যে চালক/হেলপার আমাদের নির্দেশ মানতে চান না। তবে আমাদের দায়িত্বে কোন ত্রুটি নেই। আমরা সাধ্যমত চেষ্টা কারে যাই।’

এবিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের মহাখালী জোনের এসি আরিফুল ইসলাম রনি বলেন, ‘আমরা কিছুটা জনবল সংকটে রয়েছি। তারপরেও জনভোগান্তি কমাতে আমারা সব সময় রাস্তায় রয়েছি। আমারা সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি, যাতে জনভোন্তি রোধ করতে পারি।’

 

একুশে সংবাদ/জাহা

Link copied!