AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

বাজার নিয়ন্ত্রণে নয়া আইন করতে যাচ্ছে সরকার


Ekushey Sangbad
হাসান কাজল
০৮:৪৩ পিএম, ১৪ মে, ২০২৪
বাজার নিয়ন্ত্রণে নয়া আইন করতে যাচ্ছে সরকার

  • বাজার নিয়ন্ত্রণে ৬৮ বছর পর আসছে নতুন আইন
  • নিত্যপণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে ধান, চাল, গম, আটা ও আলু
  • নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রাখে সরকার

দ্রব্যমূল্য ও বাজার নিয়ন্ত্রণে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের তালিকা হালনাগাদ করার পাশাপাশি চিহ্নিত অপরাধের শাস্তি বাড়িয়ে নতুন আইন করতে যাচ্ছে সরকার। ৬৮ বছর পর নতুন আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়ায় অবশেষে ধান, চাল, গম, আটা ও আলু নিত্যপণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে। এবারও স্বীকৃতি পাচ্ছে না অবশ্য পানি। এছাড়া সাবান, কীটনাশক, ডিটারজেন্ট পাউডার, টুথপেস্ট এগুলো সমাজের সর্বস্তরে প্রতিদিন কমবেশি ব্যবহৃত হলেও নিত্যপণ্য হিসেবে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে না। তবে নিত্যপণ্য হিসেবে বাদ পড়ছে সিগারেট, কয়লা ও কাঠ। আর যুক্ত হচ্ছে বিদ্যুৎ।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তৈরি প্রস্তাবিত অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন, ২০২৪-এর খসড়া বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য জানা গেছে। খসড়ার ওপর চলতি সপ্তাহের মধ্যে আগ্রহী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে মতামত আশা করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রচলিত আইনটির নাম ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৫৬’। এটি  বদলে করা হচ্ছে ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন, ২০২৪’। নতুন আইন থেকে ‘নিয়ন্ত্রণ’ শব্দটিও বাদ দেওয়া হচ্ছে।

অত্যাবশ্যকীয় পণ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত থাকা না-থাকার মধ্যে পার্থক্য কীÍজানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, তালিকায় থাকলে দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার যেকোনো সময় ব্যবস্থা নিতে পারে। অতিরিক্ত মুনাফার লোভে কেউ কারসাজি করলে, লম্বা সময়ের জন্য মজুত রাখলে বা কৃত্রিম সংকট তৈরি করলে তখন আইনি পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়। শুধু মূল্য নিয়ন্ত্রণ নয়, আইন অনুযায়ী অত্যাবশ্যকীয় নিত্যপণ্যের উৎপাদন ও বিপণন নিয়ন্ত্রণ করারও ক্ষমতা রাখে সরকার।

সিগারেটকে নিত্যপণ্যের তালিকায় রাখা ভালো হবে, নাকি তালিকা থেকে বাদ দেওয়া ভালো হবেÍতা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মতে, বাদ দিলে সিগারেটের উৎপাদন, বিপণন ও মূল্য নিয়ন্ত্রণবিষয়ক কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের ক্ষমতা কমে যাবে।

১৯৫৬ সালের মূল আইনে ৩৪ ধরনের নিত্যপণ্যের তালিকা দেওয়া আছে। প্রথম শ্রেণিটিই হচ্ছে ভোজ্যতেল, তৈলবীজসহ খাদ্যদ্রব্য। বিদ্যমান আইনে আরও রয়েছে নিউজপ্রিন্টসহ সব ধরনের কাগজ, জ্বালানি তেল, ইস্পাত, প্রাকৃতিক রেশম সুতা, কয়লা, ওষুধ, সাইকেল ও সাইকেলের যন্ত্রাংশ, সিগারেট, চা, চিনি, শেভিং ব্লেড, সেলাই মেশিন, শিশুখাদ্য, স্কুল-কলেজের পাঠ্যবই, তুলার সুতা, গ্যাসসহ রাসায়নিক পণ্য, ইলেকট্রিক্যাল পণ্য, গ্লাস, কাঠ, সিমেন্ট, স্যানিটারি ফিটিংস, টাইলস, সিনেমার কাঁচা ফিল্ম, রাসায়নিক সার, টাইপরাইটার ইত্যাদি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ২০১২ সালের জুলাইয়ে ১৭টি পণ্যকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ঘোষণা করে। এগুলো হচ্ছে,

 পেঁয়াজ, রসুন, মসুর ডাল, ছোলা, শুকনা মরিচ, দারুচিনি, লবঙ্গ, এলাচি, ধনে, জিরা, আদা, হলুদ, তেজপাতা, সয়াবিন তেল, পাম তেল, চিনি ও খাওয়ার লবণ। চিনি ও ভোজ্যতেল মূল আইনেও ছিল, ২০১২ সালেও নতুন করে উল্লেখ করা হয়।

বিদ্যমান আইনকে যুগোপযোগী করতে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন ও বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন  বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে সুপারিশ করেছিল এক বছর আগেই। প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, যেকোনো অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, সংরক্ষণ, পরিবহন, সরবরাহ, বিক্রি, নিষ্পত্তি, অধিগ্রহণ, ব্যবহার বা ভোগ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করতে এবং এগুলোর ব্যবসা-বাণিজ্য সীমিত করতে পারবে সরকার।

পণ্যের বিক্রি স্থগিত রাখা বা নিষিদ্ধ করার ক্ষমতাও সরকারের থাকবে। এ ছাড়া যেকোনো অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের আমদানি ও রপ্তানি উন্মুক্ত বা নিষিদ্ধ করতে পারবে সরকার। সরকার যেকোনো অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যপণ্য নিম্ন আয়ের জনগণের কাছে বিক্রির জন্য ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশকে দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে সরাসরি পণ্য কেনার ক্ষমতা দিতে পারবে।

আইন লঙ্ঘনকারীকে তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা ১০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান থাকবে। কেউ নির্দেশ পরিপালনে ব্যর্থ হলে, 

আদেশ লঙ্ঘনের চেষ্টা করলে এমনকি প্ররোচনা দিলেও তিনি তিন বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন বা তিন লাখ টাকা জরিমানা গুনবেন অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। কেউ মিথ্যা তথ্য দিলে বিদ্যমান আইনে শুধু তিন বছরের কারাদণ্ডের বিধান আছে। নতুন আইনের খসড়ায় প্রস্তাব করা হয়েছে, অপরাধ প্রমাণিত হলে দোষী ব্যক্তি কারাদণ্ডের পাশাপাশি এক লাখ টাকা জরিমানা দেবেন বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের  সভাপতি  বলেন, ‘১৯৫৬ সালের আইনের তালিকায় এমন সব পণ্য ছিল, যেগুলো নিত্যপণ্যের মধ্যে পড়ে না। ভালো দিক হচ্ছে চাল, গম, আটার পাশাপাশি বিদ্যুৎকেও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। তবে জীবন যার অপর নাম, সেই পানিকে বাদ রাখা ঠিক হবে না।’

তিনি অরও বলেন, 

‘সাবান, কীটনাশক, ডিটারজেন্ট পাউডার, টুথপেস্ট ইত্যাদি নিত্যপণ্য হিসেবে থাকলে আরো ভালো হতো, তবে না থাকলেও তেমন কোন অসুবিধা নেই। তালিকা লম্বা না করাই ভালো, তবে সাধারণ ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার স্বার্থে যেগুলো থাকবে সেগুলোর উৎপাদন, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি ঠিক রাখার ব্যাপারে সরকার যেন আন্তরিক থাকে।

এর আগে, ২০১২ সালে পুরোনো আইন অনুযায়ী প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে ১৭টি পণ্যকে অত্যাবশ্যকীয় হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। এগুলো হচ্ছে- পেঁয়াজ, রসুন, মসুর ডাল, ছোলা, শুকনো মরিচ, দারুচিনি, লবঙ্গ, এলাচ, ধনে, জিরা, আদা, হলুদ, তেজপাতা, সয়াবিন তেল, পাম তেল, চিনি ও বিট লবণ ছাড়া অন্যান্য খাবার লবণ।

নতন আইনের খসড়ায়- খাদ্যশস্যের মধ্যে ধান, চাউল ও গম, আটা, আলু, বীজ ও চারা, মসুর ডাল, ছোলা, ভোজ্যতেল ও তৈলবীজ, পেঁয়াজ, রসুন, শুকনা মরিচ, দারুচিনি, লবঙ্গ, এলাচ, ধনে, জিরা, আদা, হলুদ, চিনি, খাবার লবণ, গুড়, মাছ, মৎস্যজাত খাদ্য, মাংস, দুধ, ডিমের এর নাম রয়েছে।


একুশে সংবাদ/হ.ক.প্র/জাহা 

Link copied!