ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন ও তার প্রেক্ষাপট নিয়ে ফেসবুক পোস্টে জাতীয় রাজনীতি ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
তিনি লিখেছেন, “আজ ডাকসুতে যারা জিতবে, তারা কীভাবে দায়িত্ব নেবে এবং যারা হারবে, তারা কীভাবে পরাজয় গ্রহণ করবে, তা আমাদের জাতীয় রাজনীতি ও গণতন্ত্রের দিক নির্ধারণ করবে।”
হাসনাত আব্দুল্লাহ উল্লেখ করেছেন, নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো যে পরিমাণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাব দেখিয়েছে, তা উদ্বেগজনক। তিনি বলেন, “পেশিশক্তি, জনশক্তি ও সংগঠিত উপস্থিতির মাধ্যমে নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা ছাত্র রাজনীতির স্বতন্ত্র চরিত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ডাকসু এখন কেবল ছাত্রদের ম্যান্ডেট বহন করছে না, বরং জাতীয় রাজনৈতিক দলের এক্সটেনশন হিসেবে পরিণত হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, শিক্ষক ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ‘ট্যাগ’ করার প্রবণতা শেখ হাসিনার শাসনামলের রাজনৈতিক বাস্তবতার ধারাবাহিকতা হিসেবে দেখা যাচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদে এ ধরনের মানসিকতা রাজনীতিকে সংকুচিত ও অনিরাপদ করে তুলবে।
ছাত্র রাজনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে হলে নতুন নেতৃত্বকে নিয়মিতভাবে আসার সুযোগ দিতে হবে এবং পরাজয়কে পরবর্তী প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। ডাকসু নির্বাচন সেই সংস্কৃতি গড়ার একটি সম্ভাব্য শুরু হতে পারত। তবে ফলাফলকে ঘিরে অনিশ্চয়তা এবং রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা সেই সুযোগকে সীমিত করেছে।
হাসনাত আব্দুল্লাহ সব রাজনৈতিক দলকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “গণতন্ত্র শুধুই জয়ী হওয়া নয়; এটি সহিষ্ণুতার ওপর ভিত্তি করে দাঁড়ায়। ব্যক্তিগতভাবে অপছন্দনীয় প্রার্থীকেও যদি জনগণ বেছে নেয়, সেই সিদ্ধান্তকে সম্মান করা গণতন্ত্র।”
তিনি সতর্ক করেছেন, স্বল্পমেয়াদি রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত করলে পরাজয়কে সম্মানিত করার সংস্কৃতি গড়ে ওঠবে না এবং আগামী দিনের রাজনীতি জয়ীদের উল্লাস ও পরাজিতদের ক্ষোভে বন্দী থাকবে।
একুশে সংবাদ/এ.জে