বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, সরকারের সঙ্গে একটি রাজনৈতিক দলের যৌথ সংবাদ সম্মেলন দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ব্যতিক্রমধর্মী ঘটনা। এতে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো অস্বস্তিতে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
বুধবার (১৮ জুন) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের (এনসিসি) সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় দফার তৃতীয় বৈঠকের বিরতিতে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি জানান, এই ঘটনা জামায়াতের আপত্তির অন্যতম কারণ ছিল, যার কারণে দলটি আগের দিনের বৈঠকে অংশ নেয়নি। তাহের বলেন, "সরকার ও ঐকমত্য কমিশন নিরপেক্ষতা হারালে উদ্যোগটি সফলভাবে এগোনো কঠিন হবে।"
তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার দুপুরে প্রধান উপদেষ্টা জামায়াতে ইসলামীর আমিরের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। এরপর বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে জামায়াত আলোচনায় অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
তাহের বলেন, “আমরা কখনো সরকারকে ব্যর্থ করতে চাই না। বরং প্রয়োজনীয় জায়গায় সহযোগিতা করতে আগ্রহী।”
জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের নীতিগত পক্ষে রয়েছে জামায়াত। তাহের বলেন, “এই কাউন্সিল গঠন হলে ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিত করা যাবে। তবে কাউন্সিলের কাঠামো ও এখতিয়ার নিয়ে আমাদের কিছু ভিন্নমত রয়েছে।”
তাহের বলেন, এনসিসির সদস্য হিসেবে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে অন্তর্ভুক্ত না করার পক্ষে মত দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। একই সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানদের নিয়োগ এনসিসির আওতায় না রাখারও পরামর্শ দিয়েছে দলটি। তবে এসব বিষয়ে আরও আলোচনা প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
১৩ জুন লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে তারা যৌথ বিবৃতি দিয়ে আগাম নির্বাচন বিষয়ে ঘোষণা দেন এবং পরে একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনও করেন।
এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এক বৈঠকে বলা হয়, সরকারের প্রতিনিধি ও একটি দলের যৌথ বিবৃতি দেওয়া রাজনৈতিক শিষ্টাচারের বাইরে। এতে প্রধান উপদেষ্টার নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলে দলটি মনে করে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের একটি সূত্র জানিয়েছে, জামায়াত শুরুতে তাদের অনুপস্থিতির কারণ হিসেবে লন্ডনের এই বৈঠকের পরবর্তী যৌথ ঘোষণাকে ‘উপেক্ষা’ বলে মনে করেছে।
তবে পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, জামায়াতের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে এবং তারা আলোচনায় অংশ নেবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
একুশে সংবাদ/ঢ.প/এ.জে