অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করলে জাতি নতুন বিকল্প খুঁজে নেবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তবে বিএনপি চায় না তিনি এখনই সরে যান—বরং তিনি যেন সম্মানের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন ও একটি নির্বাচনী রোডম্যাপ দিয়ে জাতিকে সংকট থেকে মুক্ত করেন।
শুক্রবার (২৩ মে) সময় সংবাদকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা।
সালাহউদ্দিন বলেন,“বিএনপি ড. ইউনূসের পদত্যাগ চায় না, চায় নির্বাচনের রোডম্যাপ। কিন্তু তার পরিবর্তে সংস্কারের কথা বলে সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে। তবুও যদি কোনো আবেগঘন পরিস্থিতিতে তিনি পদত্যাগ করেন, তবে জাতি অবশ্যই বিকল্প খুঁজে নেবে।”
তিনি আরও বলেন,“ড. ইউনূসের পদত্যাগে কোনো শূন্যতা তৈরি হবে না, কিন্তু তার সম্মানের সঙ্গে থেকে দায়িত্ব পালন করাটা জাতির জন্য ভালো হবে। নির্বাচনই এই সংকটের একমাত্র সমাধান।”
সালাহউদ্দিন আহমেদের মতে,“সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন একসঙ্গে পরিচালনা করা সম্ভব। এসব করতে দেড়-দুই মাসের বেশি লাগবে না। কিন্তু সরকার দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখাতে পারছে না, বরং সময় টানার চেষ্টা করছে।”
তিনি অভিযোগ করেন,“সোমবার (১৯ মে) থেকে আমরা প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাতের চেষ্টা করছি, কিন্তু এখনো পাইনি। সরকারের অভ্যন্তরে কিছু উচ্চাভিলাষী ও আওয়ামী দোসররা বিএনপিকে প্রতিপক্ষ মনে করছে।”
সরকারি দলে থাকা উপদেষ্টা সারজিস আলমের দাবির প্রেক্ষিতে সালাহউদ্দিন বলেন,“বিএনপি ড. ইউনূসের পদত্যাগের জন্য আন্দোলন করেনি। আমরা রাস্তায় নেমেছি কারণ ইশরাক হোসেন মেয়র নির্বাচিত হয়েও শপথ নিতে পারছেন না। এটা সম্পূর্ণ ভিন্ন ইস্যু।”
এদিকে চলমান উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও ড. ইউনূসের সম্ভাব্য পদত্যাগের গুঞ্জনের মধ্যেই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যায় ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
পরে দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার গণমাধ্যমকে জানান,“ড. ইউনূস বলেছেন, তিনি কাজ করতে এসেছেন, তবে কাজ করার উপযোগী পরিস্থিতি না থাকলে পদে থাকার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবেন।”
এদিকে, জামায়াতে ইসলামী প্রধান উপদেষ্টার কাছে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জানিয়েছে। দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের জরুরি বৈঠকে এ আহ্বান জানান।
সংকটের উত্তরণে ড. ইউনূসের ভূমিকা কতটা কার্যকর হবে, তা নির্ভর করছে তার অবস্থান স্পষ্ট করার ও দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার ওপর—এমনটাই বলছে দেশের প্রধান রাজনৈতিক শক্তিগুলো।
একুশে সংবাদ/স.ট/এ.জে