বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, “আমাদের একমাত্র শত্রু আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা। তারা কখনো গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেনি, বরং গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে।”
আজ বুধবার বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মহাসমাবেশে তিনি এই মন্তব্য করেন। বিএনপির তিন সহযোগী সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশে” তিনি বক্তব্য রাখেন।
সালাহউদ্দিন অভিযোগ করেন,“ব্রিটিশ শাসনে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ২০০ বছরে যতটা লুট করেছে, আওয়ামী লীগ তার চেয়ে বেশি লুট করেছে।
তারা ৩০ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে, ৪ লাখ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ সৃষ্টি করেছে।
ব্যাংক ও বিদ্যুৎ খাতে যা লুট হয়েছে, তা দিয়ে ৩৬টি পদ্মা সেতু তৈরি করা যেত।”
তিনি বলেন, সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, অথচ দমন-পীড়ন চালিয়ে ক্ষমতায় টিকে আছে।
“ফ্যাসিস্ট শাসকের নির্যাতন ভুলে গেলে চলবে না। আমাদের রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে।”
তিনি বলেন,“৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকবে।
যারা তারেক রহমানের নেতৃত্বে আন্দোলন করেছে, তাদেরকে এখন বিভিন্ন দেশের এজেন্ট বলা হচ্ছে।
কিন্তু এ অভিযোগ আসছে তাদের দিক থেকে, যারা বিএনপিকে তাদের অস্তিত্বের অন্তরায় মনে করে।”
সালাহউদ্দিন আহমেদ সরকারের বিরুদ্ধে ‘অত্যন্ত সুকৌশলে বিরোধী ঐক্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টার’ অভিযোগও করেন।
তিনি বলেন,“আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চাইনি, চেয়েছিলাম একটি রোডম্যাপ।
কিন্তু তিনি নাটকীয়ভাবে পদত্যাগ করলেন। আমরা ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চেয়েছিলাম।”
বক্তব্যের শেষে তিনি বলেন,“সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে নিরপেক্ষ সরকার, সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে।
সবার আগে বাংলাদেশ—এই হোক আমাদের লক্ষ্য। তারেক রহমানের নেতৃত্বেই হবে নতুন বাংলাদেশ।”
এই সমাবেশটি বিএনপির তরুণ প্রজন্মকে সংগঠিত করার ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ। মে মাসজুড়ে দেশের চারটি বিভাগে তারা এ ধরনের সমাবেশ ও সেমিনার করেছে। ঢাকায় অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন তারেক রহমান।
বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপি এখন তরুণদের কেন্দ্রে রেখে আগাম রাজনৈতিক কৌশল সাজাতে চাইছে, এবং এই সমাবেশ ছিল তারই প্রকাশ্য ঘোষণাপত্র।
একুশে সংবাদ / আ.ট/এ.জে