জাতীয় পার্র্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের বিরোধী উপনেতা জি এম কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি হতে পারে; কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের নয়। কারণ তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কাজ করছে, তারা জনগণকে মুক্তি দেয়নি, জনগণের জন্য কিছুই করেনি। আমরা সুসময়ের জাতি। সেখানে একতাবদ্ধ জাতিকে বিভিন্নভাবে বিভাজন করে রেখেছে। আওয়ামী লীগ করলে সব ঠিক। আর না করলে বেঠিক। তারা একটি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের আরেকটি বিপক্ষের শক্তি বলে তরুণ প্রজন্মের মাঝে বিভাজন সৃষ্টি করে রাখছে।
শনিবার দুপুরে (১৯ আগষ্ট) শহরের টাউন হলে লক্ষীপুর জেলা জাতীয় পার্টির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, বাংলাদেশের সবাই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিল। কেউ মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল না, স্বাধীনতার বিপক্ষে কিছু লোক ছিল। বর্তমান মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় এমন মানুষের নাম রয়েছে, যাদের অনেকেইে মুক্তিযুদ্ধ করেননি। দেশ ভয়াবহ দুরবস্থার মধ্যে আছে। বিশাল খাদ্যের কিনারায় এসে পৌঁছেছে। যে কোনো সময় পড়ে যাবে। সরকার দেউলিয়া হয়ে গেছে। ব্যাংকগুলোকে বিভিন্ন লোকের হাতে দিয়ে খালি করে ফেলেছে।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের নামে আওয়ামী লীগতন্ত্র বানিয়েছে তারা। রাজতন্ত্র মানে রাজার তন্ত্র। গণতন্ত্র মানে জনগণের সরকার, জনগণ সরকার গঠন করবে। এখন আওয়ামী লীগ রাজতন্ত্র কায়েম করেছে। উন্নয়নের নামে লুটপাট করছে। দেশের মানুষ কোন মূল্যায়ন নেই অধিকার নেই। দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ না করেই খেলাপী ঋনের নামে হাজার হাজার টাকা ব্যাংক থেকে লুট করে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। দেশে মেঘা প্রকল্প নামে হাজার হাজার টাকা অনিয়ম করা হয়েছে।
সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন পার্টি মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু এমপি তিনি বলেন, শতভাগ বিদ্যুতায়ন করে ফেলেছে তারা বলে। এখন সেই বিদ্যুৎ কই? নিজস্ব কিছু লোককে তারা বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজ দিল। তাদের বসানোর শর্তই ছিল বিদ্যুৎ না দিতে পারলেও সমস্যা নেই। বসে বসে চুরি করবা। জনগণ বিদ্যুৎ পায় না। ৩২ বছরের দুর্নীতি, দুঃশাসন, অপশাসন, বিচারহীনতা, অর্থ পাচার, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজির জন্য দায়ী তারা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, লে. জে. মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এমপি, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান এমপি, ল²ীপুর-২ (রায়পুর) সাবেক এমপি মোহাম্মদ নোমান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বোরহান উদ্দিন মিঠুসহ জাতীয় পার্টি ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও লক্ষীপুর জেলা জাতীয়পার্টির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক সাবেক এমপি মোহাম্মদ উল্লাহ ও সঞ্চালনা করেন চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও জাতীয়পার্টির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব মাহমুদুর রহমান মাহমুদ।
দীর্ঘ নয় বছর পর দেশের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির অন্যতম শক্তিশালী ইউনিট লক্ষীপুর জেলা কমিটির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় রায়পুরের সাবেক এমপি মোহাম্মদ নোমান ও সদরের সাবেক এমপি মোহাম্মদ উল্লাহসহ তিনজন সভাপতি এবং সদস্য সচিব মাহমুদুর রহমান ও জেলার নেতা এম আরিফুর রহমানসহ তিনজন সাধারন সম্পাদক প্রার্থী হয়েছেন। কেন্দ্রীয় নেতারা ঢাকায় গিয়ে লক্ষীপুর জেলা কমিটি ঘোষনা দিবেন বলে ঘোষনা দিয়েছেন।
একুশে সংবাদ/এসএপি
আপনার মতামত লিখুন :