AB Bank
ঢাকা সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

বিজয়ের পতাকা প্রজন্মের হাতে


Ekushey Sangbad
A Ziadur Rahaman Zihad (এ জিহাদুর রহমান জিহাদ)
০৬:৫৩ এএম, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৩
বিজয়ের পতাকা প্রজন্মের হাতে

আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্নবোনা শুরু হয় সেই ’৪৭-এ। ধর্মভিত্তিক চিন্তাধারায় দেশভাগের পর আমরা পকিস্তান রাষ্ট্রের মালিকানা প্রাপ্ত হলেও সামন্ত ব্যবস্থাতেই আমরা নিপতিত হই। দুইপ্রান্তে দুই ভূখণ্ডের এই রাষ্ট্রে তৈরি হয় প্রজা আর জমিদারের ব্যবধান। পশ্চিম পাকিস্তানিদের দ্বারা আমরা শুধু শোষিতই হয়নি বঞ্চিতও হয়েছি লম্বা একটা সময়। এই সময় মুক্তির ডাক দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি বাঙালিকে স্বধীনতার স্বপ্ন দেখান। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্যদিয়ে বাঙালিকে নিয়ে যান স্বাধীনতা অর্জনের চূড়ান্ত ধাপে। ১৯৭১ সালে ২৫ মাচের্র পর থেকে৯ মাস বীর বাঙালি রক্তক্ষয়ি মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পৃথিবীর বুকে একে দেয় বাংলাদেশের মানচিত্র। স্বাধীন দেশে উড়ায় মুক্তির পতাকা। অবসান হয়পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর সাড়ে তেইশ বছরেরশোষণ-বঞ্চনা আর লুণ্ঠনের কালো অধ্যায়। পৃথিবীর কাছে আমাদের পরিচয় হয় আমরা বীরের জাতি; লড়াই করেÑ রক্ত দিয়ে ১৬ ডিসেম্বর আমরা বিজয় অর্জন করি।

আমাদের পূর্বসূরিরা যে বিজয় পতাকা অর্জন করেছেন আমরা প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম সেই পতাকে উড়াবো গর্ব নিয়ে। স্বাধীনতা অর্জনের প্রেক্ষাপটে তারুণ্যের ভূমিকাÑ অংশগ্রহণ বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। তারুণ্যকে কোনো ছকে বাঁধা যায় না; একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের শক্তি হিসেবে কাজ করেছে আমাদের তারুণ্য। তারণ্যের গগন বিদারী স্লোগান আর তাদের হাতে থাকা উদ্যত সঙ্গীনে ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধে বিজয় তরান্বিত হয়। যুদ্ধকালীন সেই সঙ্গীন আজ প্রজন্মের হাতেÑ তারাই অর্জিত বিজয়কে হৃদয়ে ধারন করে এগেয়ে যাবে। গড়ে তুলবে আগামীর আধুনিক-উন্নত বাংলাদেশ।

এই প্রজন্মের ভাবনা হচ্ছে বৈষম্যহীন নিরাপদ বাংলাদেশ। আধুনিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে তরুণদের নিতে হবে স্বকীয় অবস্থান। যেখানে একজন আরেকজনকে শত্রু না ভেবে একে অন্যের মিত্র হয়ে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দেশের জন্য কাজ করতে হবে। মানুষে মানুষে থাকবে না কোনো দ্বন্দ্ব।এসব উদ্দেশেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ- এই চেতনায় যেতে হবে এগিয়ে।

রাজনৈতিক নেতৃত্ব ছাড়া তরুণসমাজকে সঠিকভাবে পরিচালিত করা সম্ভব নয়। তাদের সঠিক পথ দেখাতে, তাদের মধ্যে সাহস জোগাতে এবং সৃষ্টিশীল ও সৃজনশীলতার প্রকাশে সহায়তা করতে পারে একমাত্র রাজনৈতিক নেতৃত্ব। দেশপ্রেম জাগ্রত করতে পারে একমাত্র রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বা তার দল। যেমনটি পেরেছিলেন আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর নেতৃত্ব ছিল অসাধারণ। এখানে নেতৃত্ব যেমন ছিল রাজনৈতিক পাশাপাশি আর্থসামাজিক। রাজনৈতিক নেতৃত্বের বিকল্প মেলা কঠিন এ কারণে, এমন নেতৃত্ব একাধারে কঠিন ও এর মধ্যে আস্থাশীলতা কম। দেশ পরিচালিত হয় রাজনৈতিক নেতা দ্বারা। গণতান্ত্রিক সরকারব্যবস্থায় এমন নেতৃত্বই গণতান্ত্রিক। কিন্তু আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে সঠিক নেতৃত্বের গুণাবলি কমে যাওয়ায় তরুণরা নেতাদের প্রতি আর আস্থা রাখতে পারছে না। তাদের প্রতি আস্থাহীনতার একটি বড় কারণ হতে পারে, তরুণদের নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করার চেষ্টা। নিজেদের জন্য ব্যবহার না করে তাদের শুধু যে কাজে ব্যবহার করলে আমরা দ্রুত উন্নত দেশের দিকে ধাবিত হব। সঠিক রাজনৈতিক নেতৃত্ব এতটাই শক্ত ও নিখুঁত, যেখানে কাজের কাজ বেশি। তবে এ কথা সত্য যে রাজনৈতিক দলের বাইরে থেকেও তরুণদের নেতৃত্ব দেওয়ার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। এর জন্য প্রয়োজন সঠিক মানসিকতা। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া তরুণদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে তাদের উদীপ্ত করা যায়।

আজকের বাংলাদেশেরউন্নয়নের ভিত্তি গড়ে দিয়েছিলেন স্বয়ং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল এ দেশকে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলায় পরিণত করা।১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর পাকিস্তানের চব্বিশ বছরের শোষণ এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন পাকিস্তানি হানাদারদের নৃশংসতায় ধ্বংসপ্রাপ্ত অকাঠামো ও অর্থনীতির ওপর দাঁড়িয়ে জাতির পিতা যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিলেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে তিনি বাংলাদেশকে বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর বাংলাদেশের অগ্রগতি থেমে যায়। পঁচাত্তর-পরবর্তী সরকারগুলোর জনবিচ্ছিন্নতা, লুটপাট ও উন্নয়নদর্শনবিহীন রাষ্ট্র পরিচালনা বাংলাদেশকে একটি মর্যাদাহীন রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ পরিচিতি পেয়েছিল ঝড়, জলোচ্ছ্বাস এবং ভিক্ষুক-দরিদ্র-হাড্ডিসার মানুষের দেশ হিসেবে। তার বিপরীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব ও উন্নয়নবান্ধব শাসননীতির ফলে সেই বাংলাদেশই আজ ‘মোস্ট এমার্জিং ইকোনমি অফ দ্য ওয়ার্ল্ড’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে তার কন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের সুফল প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছে দিতে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেন।যোগাযোগব্যবস্থার ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি যুগান্তকারী ও সাহসী পদক্ষেপটি ছিল নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ। দেশব্যাপী যোগাগোগব্যবস্থা উন্নয়নের প্রশ্নে অনেক দূর এগিয়ে গেছি আমরা। দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ সক্ষমতা সম্প্রসারণ করা হয়েছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দূরদর্শী নেতেৃত্বে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় একটি অনন্য মাইলফলক। এবার দেশরতœ শেখ হাসিনার লক্ষ্য হলো ২০৩১ সালের মধ্যে দেশকে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করা।

স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট গভর্নমেন্ট, স্মার্ট ইকোনমি ও স্মার্ট সোসাইটি। ২০৪১ সালের স্মার্ট সিটিজেন তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ হওয়ার পাশাপাশি সরকারি সেবার মানোন্নয়ন ও নীতি প্রণয়নের সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। ‘স্মার্ট গভর্নমেন্ট’-এর মূল লক্ষ্য শতভাগ পেপারলেস অফিস প্রণয়নের মধ্য দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, কৃষি, রাজস্ব ব্যবস্থাপনা, গণনিরাপত্তা প্রভৃতি নিশ্চিত করা হবেসর্বোপরি ‘স্মার্ট সোসাইটি’ হবে এমন সোসাইটি, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য ‘কাউকে পেছনে ফেলে নয়’-এর অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করবে এবং সবার অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করবে।

আমাদের বিজয়ের এই ধারাবহিকতা রক্ষা করতে হবে আগামী প্রজন্মকে। আজকে যারা তরুণ আগামীতে তারাই যুবা। তাদের হতেই তুলে দিতে হবে বিজয়ের পতাকা। তারাই গড়ে তুলবে আগামীর উন্নত বাংলাদেশ এবারের বিজয় দিবসে আমাদের প্রত্যাশা।

 

লেখক :  সাংগঠনিক সম্পাদক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)

 

Link copied!