AB Bank
  • ঢাকা
  • রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে উৎসবমুখর


Ekushey Sangbad
হাসান কাজল
০৩:৫০ পিএম, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে উৎসবমুখর

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ সময় ঘোষণা করেছেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার, নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতি ইতোমধ্যে জনসমক্ষে এসেছে।

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নির্বাচন কেবল জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের প্রক্রিয়া নয়, এটি জনগণের মতামত প্রকাশ এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় সক্রিয় অংশগ্রহণের মৌলিক অধিকার। নির্বাচন যত স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ হবে, গণতন্ত্র তত বেশি সুসংহত হবে।

সরকার জানিয়েছে, নির্বাচন আয়োজনে প্রয়োজনীয় সব অবকাঠামোগত প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও আনসার সদস্যদের পাশাপাশি সেনাবাহিনীও মাঠে থাকবে, যাতে সহিংসতা বা অনিয়মের কোনো সুযোগ না থাকে। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, সশস্ত্র বাহিনী মাঠে থাকলে ভোটাররা নিশ্চিন্তে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। এবারও সেনাবাহিনী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা নিয়ে নির্বাচনকেন্দ্রিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

অন্যদিকে, নির্বাচন কমিশনও নানা প্রস্তুতি শুরু করেছে— ভোটার তালিকা হালনাগাদ, ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ, প্রার্থীদের মনোনয়ন যাচাইসহ সব কার্যক্রম এগিয়ে চলছে। সবার প্রত্যাশা, কমিশন আরও কার্যকর, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক ভূমিকা পালন করবে।

তবে সফল নির্বাচন শুধু সরকারি প্রস্তুতির ওপর নির্ভর করে না; এতে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং জনগণের সচেতন অংশগ্রহণ অপরিহার্য। প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দলগুলোকেও দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। সরকার, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যদি অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তবে গণতন্ত্রের ভিত্তি আরও মজবুত হবে এবং জনগণের আস্থাও ফিরে আসবে।

রাজনৈতিক দলগুলো ইতোমধ্যে নির্বাচনী তোড়জোড় শুরু করেছে। রাজধানী থেকে তৃণমূলে সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠ গোছাতে ব্যস্ত। ইসি সংসদীয় আসনের সীমানা চূড়ান্ত করেছে এবং কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। গত ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর থেকেই সেনাবাহিনী সরকারকে সহযোগিতা করে আসছে এবং আসন্ন নির্বাচনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

নির্বাচনের ঘোষণার পর দেশের রাজনীতিতে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ভোট। রাজনৈতিক দলগুলো প্রতিদ্বন্দ্বীকে টেক্কা দেওয়ার কৌশল নির্ধারণে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। তবে জুলাই সনদ, বিচার প্রক্রিয়া ও সমান প্রতিযোগিতার পরিবেশ নিয়ে সংশয় কাটেনি বলে অনেকে মনে করছেন। ইতোমধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে নির্বাচন কমিশনকে আগামী রমজানের আগে নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সে অনুযায়ী কাজও এগিয়ে চলছে।

বিএনপিসহ বেশ কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচনকে স্বাগত জানিয়েছে। বিএনপি একে ‘ঐতিহাসিক’ ঘোষণা বলে আখ্যা দিয়েছে এবং সাংগঠনিক প্রস্তুতিও শুরু করেছে। তবে তারা সংস্কার ও বিচার কার্যক্রম কতটা দৃশ্যমান হয়, সেদিকে নজর রাখবে। জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ কয়েকটি দল সংস্কার প্রক্রিয়ার আইনগত বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। যদিও তারাও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং সরকারের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী।

জাতীয় নাগরিক পার্টি আবারও বলেছে, জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্রের ভিত্তিতেই নির্বাচন হতে হবে। তাদের মতে, সংস্কার ও বিচার কার্যক্রম যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করলে তবেই নির্বাচন প্রকৃত অর্থে গ্রহণযোগ্য হবে।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে বিশেষ দায়িত্ব পালনের জন্য। এর প্রধান দায়িত্ব হলো দ্রুততম সময়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা জনগণের প্রতিনিধিদের কাছে হস্তান্তর করা। পাশাপাশি অতীতের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিশ্চিত করা এবং রাষ্ট্রব্যবস্থার সংস্কারের ভিত্তি তৈরি করা। তবে বড় ধরনের সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করবে ভবিষ্যতের নির্বাচিত সরকারই।

নির্বাচন নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোরও চেষ্টা চলছে। কেউ কেউ বলছে, নির্ধারিত সময়ে ভোট হবে না। এমনকি সেনাবাহিনী নিয়েও অপপ্রচার চলছে। তবে সরকার বলছে, এ নির্বাচন হবে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ। যারা এ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে চায়, তারা নানা চক্রান্তে লিপ্ত থাকবে। তাই এখন প্রয়োজন জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকা।

সবশেষে বলা যায়, ইসি, সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচনে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। সবচেয়ে বড় কথা, দেশের মানুষ এখন এক মহা ভোট উৎসবের অপেক্ষায়। সরকারকে অবশ্যই প্রতিশ্রুতির প্রতি অবিচল থাকতে হবে এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে ক্ষুদ্র স্বার্থ ভুলে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে— যেমনটি ঘটেছিল গত বছরের গণ-অভ্যুত্থানে।

 

একুশে সংবাদ/এ.জে

Link copied!