যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এমপি এবং সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক নিজেকে ব্রিটিশ পরিচয় দিলেও, তাকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবেই দেখছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থার চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, কাগজপত্র ঘেঁটে তাকে ‘বাংলাদেশি মনে হচ্ছে’।
সোমবার (১৬ জুন) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আমাদের কাছে তিনটি মামলা বিচারাধীন এবং একটি তদন্তাধীন রয়েছে। তিনি নিজেকে যতই ব্রিটিশ দাবি করুন না কেন, আমরা আমাদের নথিপত্রে তাকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবেই পাচ্ছি।”
তিনি আরও বলেন, “অবস্থাভেদে কখনো নিজেকে ব্রিটিশ, আবার কখনো বাংলাদেশি বলে সুবিধা নেওয়া কি ঠিক হচ্ছে? সাংবাদিকরা এটা ভেবে দেখতে পারেন।”
টিউলিপ নির্দোষ দাবি করলেও কেন তিনি যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন—এ প্রশ্নও তোলেন দুদক চেয়ারম্যান। বলেন, “যদি নির্দোষ হয়ে থাকেন, তাহলে মন্ত্রীত্ব ছেড়ে দিলেন কেন? তার আইনজীবী দুদকে চিঠি লিখেছেন কেন?”
দুদক চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, টিউলিপের বিরুদ্ধে রাজউক ও গুলশান প্লট সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগ আছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি একটি প্লট অবৈধভাবে হস্তান্তর করিয়ে ‘ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেড’-এর কাছ থেকে ঘুষ হিসেবে একটি ফ্ল্যাট গ্রহণ করেছেন। এ বিষয়ে ১৫ এপ্রিল একটি মামলা করেছে দুদক।
আয়কর রিটার্ন বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, “তার রিটার্নে দেখা গেছে, স্বর্ণালঙ্কারের পরিমাণ ১০ ভরি থেকে হঠাৎ করে ৩০ ভরিতে পৌঁছেছে, কিন্তু দাম একই আছে—এটি স্বাভাবিক নয়।”
দুদক জানিয়েছে, টিউলিপের বিরুদ্ধে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং প্রয়োজনীয় নোটিশ যথাযথ ঠিকানায় পাঠানো হচ্ছে। ১৪ মে ও ১৫ জুন তাকে তলব করা হয়েছে। তবে টিউলিপ দাবি করছেন, তিনি কোনো তলবি চিঠি পাননি।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক, যিনি যুক্তরাজ্যে জনপ্রিয় এমপি হিসেবে পরিচিত, গত বছর সাধারণ নির্বাচনে চতুর্থবারের মতো লন্ডনের হ্যাম্পস্টিড অ্যান্ড হাইগেট আসন থেকে বিজয়ী হন। পরে তাকে লেবার সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ইকোনমিক সেক্রেটারি টু দ্য ট্রেজারি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে লন্ডনে শেখ হাসিনা ঘনিষ্ঠদের ফ্ল্যাট ব্যবহারের অভিযোগ ও অন্যান্য বিতর্কের মুখে গত জানুয়ারিতে তিনি পদত্যাগ করেন।
একুশে সংবাদ/জা.নি/এ.জে