ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের স্থলবন্দরগুলো দিয়ে বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে দেশটির বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়। ফলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ একাধিক পণ্যের রপ্তানি কার্যত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআই।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মিজোরাম এবং পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা ও ফুলবাড়ি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। বর্তমানে বাংলাদেশ যেসব পণ্য ভারতে রপ্তানি করে, তার প্রায় ৯৩ শতাংশই এসব বন্দর ব্যবহার করে। এখন থেকে এসব পণ্য কেবল পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা সমুদ্রবন্দর ও মহারাষ্ট্রের নহাভা শেভা বন্দরের মাধ্যমে প্রবেশ করতে পারবে।
ভারতের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ একতরফাভাবে ভারতের বাজারে প্রবেশাধিকার পেলেও ভারতীয় পণ্যের ক্ষেত্রে সে সুবিধা দেয়নি। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার ভাষ্য, “পারস্পরিকতার ভিত্তিতে বাণিজ্য চলবে। একতরফা ছাড় আর নয়।”
এছাড়া ট্রানজিট ফি নিয়েও আপত্তি জানিয়েছে ভারত। তারা বলছে, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ পণ্যের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে টনপ্রতি ০.৮ টাকা নিলেও ভারতীয় পণ্যের জন্য তা ১.৮ টাকা ধার্য করছে, যা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শিল্প খাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
নিষেধাজ্ঞার ফলে তৈরি পোশাক, প্লাস্টিক, মেলামাইন, আসবাবপত্র, জুস, কোমল পানীয় ও প্রসেসড ফুডসহ একাধিক পণ্য রপ্তানি বাধার মুখে পড়বে। সবচেয়ে বেশি ধাক্কা আসবে তৈরি পোশাক খাতে, যেখান থেকে বাংলাদেশ প্রতিবছর প্রায় ৭৪০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য ভারতে রপ্তানি করে।
বিশ্লেষকদের মতে, এ সিদ্ধান্ত দুই দেশের দীর্ঘদিনের বাণিজ্যিক সম্পর্কের জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের জন্য এটি যেমন আর্থিক আঘাত, তেমনি ভারতের স্থানীয় উৎপাদকদের জন্য হতে পারে বাজার দখলের নতুন সুযোগ।
একুশে সংবাদ/ আ.ট/এ.জে