AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

গরমের সাথে সাথে হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে রোগীর চাপ


Ekushey Sangbad
বেলায়েত হোসেন, ঢাকা
০২:২৩ পিএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
গরমের সাথে সাথে হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে রোগীর চাপ

কাঠফাটা রোদ আর দাবদাহে হাঁসফাঁস অবস্থা জনজীবনে। দুর্বিসহ গরমে ঘরে-বাইরে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। গত কয়েকদিনের কড়া রোদের সঙ্গে ভ্যাপসা গরমে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্তদের চাপ বাড়ছে হাসপাতালগুলোতে। এছাড়াও জন্ডিস, হিট স্ট্রোক, সর্দি-জ্বর নিয়েও হাসপাতালে ছুটে আসছেন রোগীরা। তবে বেশি অসুস্থ হচ্ছেন বয়স্ক ও শিশুরা। এর মধ্যে রাজধানীর মহাখালির আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর’বি) বা কলেরা হাসপাতাল প্রতিদিন রোগীর চাপ বাড়ছে। গত এক সপ্তাহে রেকর্ডসংখ্যক রোগী ভর্তি হয়েছেন। 

শুক্রবার সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালগুলোতে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় চার থেকে পাঁচগুণ বেশি রোগী ভিড় জমাচ্ছে। সকাল থেকে রোগীর সংখ্যা চাপ কম হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। তাদের সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা।

চিকিৎসকরা বলছেন, গরমে অতিরিক্ত ঘাম কারণে শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি হচ্ছে। আবার বাতাসের আদ্রতা স্বাভাবিকের চেয়ে কম হওয়ায়  তাপাদাহের মধ্যে ঠোট শুকিয়ে ও ফেটে যাচ্ছে। আবার গ্রামের মানুষ স্বাস্থ্যসচেতন নয়। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে থাকার কারণে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ এবং হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপও বাড়ছে। তাই গরমে বেশি বেশি বিশুদ্ধ পানি পান করা, ফলমূলের সরবত পান, পচা-বাসী ও বাইরের  খাবার না খাওয়া এবং জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

কলেরা হাসপাতালে একাধিক রোগী স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে তীব্র তাপদাহে শুধু রাজধানী নয়, সারাদেশ থেকেই ডায়রিয়ার রোগী আসছে কলেরা হাসপাতালে। রোগীরা ডায়রিয়া শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে এবং হাঁটাচলার শক্তি প্রায় হারিয়ে ফেলছে। কেউ সরাসরি এইখানে নিয়ে এসেছেন আবার অনেকে অন্য হাসপাতাল থেকে রেফারে এখানে নিয়ে এসেছেন। হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

আইসিডিডিআর’বি

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর থেকে এসেছেন ময়না বেগম। তার ১৪ মাসের শিশু মরিয়মকে কোলে নিয়ে কান্নাকাটি করছে।  চোখে মুখে দু:চিন্তা আর হতাশার প্রকাশ করে তিনির বলেন, সবার রোগী ভালো হয়ে যায়। কিন্তু আমার বাচ্চাটা ভালো হচ্ছে না। বমি আর ডায়রিয়া বন্ধ হয় না। শুধু কান্নাকাটি করে। বুকের দুধ পর্যন্ত খাচ্ছেন না। শরীর ক্রমেই দূর্বর হয়ে পড়ছে। ছেলের চিন্তায় তাদের পুরো পরিবার খুবই দু:চিন্তায় আছে বলেও জানান তিনি।  

সাভার থেকে দুই বছরের ছেলেকে নিয়ে আসা এসেছেন জুলহাস হোসেন। তিনি জানান, গরমের কারণে দুই দিন  ধরে ডায়রিয়া হচ্ছে। প্রথমে ফামের্সী থেকে ওষুধ খাওয়ার পরও ভাল হয়নি। পরে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে ওখানকার চিকিৎসকরা কলেরা হাসাপাতালে রেফার্ড করেছে। গতরাত এখানে ভর্তি করেছি। তার পর থেকে কিছুটা উন্নতি হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

মিরপুর-১১ থেকে আরেক রোগী মনির হোসেন (৬০) বলেন, মঙ্গলবার রাতে ভর্তি হয়েছি। আমার এলাকার পানিতে প্রচুর ময়লা ও র্দুগন্ধ আসে। আমরা মনে হয় সেই পানি খাওয়ার কারণেই  ডায়রিয়া হয়েছে। তার ছেলে পাপ্পু মিয়াও একই কথা বলেন।

গরমের কারণে হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর  চাপ কতটা বেড়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে আইসিডিডিআরবি’র সায়েন্টিস্ট যোবায়ের চিসতী বলেন, গত কয়েকদিনের অসহনীয় গরমে রোগীর স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেড়েছে। স্বাভাবিক সময়ে এখানে গড়ে ২৫০/৩০০ রোগী ভর্তি হয়ে থাকে। কিন্তু এখন রোগীর ভর্তির গড় ৫’শ ছাড়িয়েছে। যদিও কিছুদিন আগে রোগীর চাপ আরও বেশি ছিল। তবে এখন যে তাপমাত্রা বিরাজ করছে তা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর চাপ আরও বাড়বে।

তিনি বলেন, আমরা যে সব রোগী পাচ্ছি তার বেশির ভাগই হচ্ছে গরম এবং পানিরাহিত ডায়রিয়া রোগী। গরমের কারণে সবাই পিপাসার্ত থাকেন। বিশেষ করে দরিদ্র শ্রেণীর মানুষ যারা বেশিরভাগ সময়ে বাইরে থাকেন। তাই তৃষ্ণা মেটাতে অনেকেই অনিরাপদ পানি পান ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে থাকেন। এতে ফুড পয়জনিং থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এছাড়া টাইফয়েড ও পানিবাহিত হেপাটাইটিস, জন্ডিস হওয়ার সম্ভবনাও থাকে। বিশেষ করে শিশুদের ডায়রিয়া হলে অনেক ক্ষেত্রেই বিষয়টা অভিভাবকরা গুরুত্বের সঙ্গে নেন না। কিন্তু  ডায়রিয়ার চিকিৎসা খুবই সহজ। নিকটস্থ হাসপাতাল থেকে শুরু করে সব জায়গায় ডায়রিয়ার ভাল চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে। আর যতবার পাতলা পায়খানা হবে, ততবার একটি করে খাবার স্যালাইন খেতে হবে। এভাবে চলতে থাকলে এমনিতেই রোগী সুস্থ হয়ে যাবে, তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসারও প্রয়োজন হবে না।

 

একুশে সংবাদ/বিএইচ

Link copied!