শেখ হাসিনার দীর্ঘ শাসনামলে টিএফআই ও জেআইসি সেলে বিরোধী মতাদর্শের ব্যক্তিদের তুলে নিয়ে গুম ও নির্যাতনের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক দুই মামলায় সেনাবাহিনীর ১৩ কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। এ দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট আসামির সংখ্যা ৩০।
রোববার (২৩ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের বিশেষ কারাগার থেকে কড়া নিরাপত্তায় প্রিজন ভ্যানে করে তাদের ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। পরে ভ্যান থেকে নামিয়ে একে একে হাজতখানায় নিয়ে যায় পুলিশ। ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট এলাকা ঘিরে সকাল থেকেই র্যাব, বিজিবি ও পুলিশের বিশেষ টিম সতর্ক অবস্থানে থাকে। সাদা পোশাকেও গোয়েন্দা সংস্থার তৎপরতা লক্ষ করা যায়।
এদিন ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের প্যানেলে দুই মামলার ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ফেরত–সংক্রান্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন এবং প্রয়োজন হলে তাদের পক্ষে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগের বিষয়টিও আজ বিবেচনায় আসতে পারে।
ট্রাইব্যুনালে হাজির ১৩ সেনা কর্মকর্তা
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম (সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক, র্যাব), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), ,লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান (সাবেক পরিচালক, র্যাব গোয়েন্দা শাখা), লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন (সাবেক পরিচালক, ডিজিএফআই), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।
মামলার প্রেক্ষাপট
গত ২০ নভেম্বর এই দুই মামলার শুনানির তারিখ নির্ধারিত থাকলেও প্রসিকিউশনের আবেদনে তা পেছানো হয়। তার আগে ২২ অক্টোবর সেনা হেফাজতে থাকা ১৩ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে আদালত তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পাশাপাশি পলাতক আসামিদের হাজিরের জন্য জাতীয় দৈনিক দুইটিতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশও দেওয়া হয়।
৮ অক্টোবর পৃথক দুই মামলায় মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। টিএফআই সেলে নির্যাতন–গুমের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনকে আসামি করা হয়। বাকি মামলাটি জেআইসি বা ‘আয়নাঘর’–এ গুম–নির্যাতনের অভিযোগে দায়ের করা হয়, যেখানে আরও ১৩ জন সাবেক সেনা-গোয়েন্দা কর্মকর্তার নাম রয়েছে। এ মামলায় তিনজন কারাগারে থাকলেও অন্যরা পলাতক।
একুশে সংবাদ//এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

