২০২৪ সালের জুলাই–আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার অভিযোগে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে রায় পাঠ শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার পর ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল রায় পড়া শুরু করেন। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
মামলার দুই আসামি—শেখ হাসিনা ও কামাল পলাতক। তবে গ্রেপ্তার হয়ে এক বছর ধরে কারাগারে থাকা সাবেক আইজিপি মামুন ইতোমধ্যে রাজসাক্ষী হিসেবে আদালতে তাদের বিরুদ্ধে জবানবন্দি দিয়েছেন। তার শাস্তি বিষয়ে সিদ্ধান্ত ট্রাইব্যুনালের ওপর ছেড়ে দিয়েছে প্রসিকিউশন। অন্যদিকে হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছে তারা।
সোমবার সকাল ৯টা ১০ মিনিটের পর কঠোর নিরাপত্তার মধ্যেই কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে করে মামুনকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। হাজতখানায় ঢোকার আগে তাকে বেশ নিচু হয়ে হাঁটতে দেখা যায়।
রায় ঘিরে ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। পুলিশ-র্যাব, এপিবিএন, বিজিবির পাশাপাশি মোতায়েন রয়েছে সেনাবাহিনীও। সক্রিয় গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। নিরাপত্তার কারণে রোববার সন্ধ্যার পর থেকেই দোয়েল চত্বর হয়ে শিক্ষাভবনমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। সীমিত রাখা হয় পথচারী চলাচল।
২৮ কার্যদিবসে ৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষ হয়। এরপর ৯ কার্যদিবস চলে প্রসিকিউশন ও ডিফেন্সের যুক্তিতর্ক ও পাল্টা যুক্তি।
২৩ অক্টোবর অ্যাটর্নি জেনারেল, চিফ প্রসিকিউটর ও রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেনের যুক্তিখণ্ডন শেষে আজকের রায় ঘোষণার দিন ঠিক হয়।
প্রসিকিউশন শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ শাস্তি চাইলে রাজসাক্ষী মামুনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত ট্রাইব্যুনালের বিবেচনায় রাখতে বলে। অন্যদিকে রাষ্ট্রনিযুক্ত ডিফেন্স আইনজীবী আশা প্রকাশ করেছেন—হাসিনা ও কামাল খালাস পাবেন।
এই মামলায় উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ, রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা, চানখারপুলে ছয় ছাত্র হত্যা এবং আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর অভিযোগ আনা হয়েছে তিন আসামির বিরুদ্ধে।
আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র ৮,৭৪৭ পৃষ্ঠার; যার মধ্যে তথ্যসূত্র ২,০১৮ পৃষ্ঠা, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণ ৪,০০৫ পৃষ্ঠা এবং শহীদদের তালিকা ২,৭২৪ পৃষ্ঠা।মোট ৮৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ//এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

