আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সংঘটিত গণহত্যা ও লাশ পোড়ানোর ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলামসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। এই মামলার অভিযোগ আমলে নেওয়া সংক্রান্ত শুনানি বুধবার (২ জুলাই) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে সকালে পুলিশ হেফাজতে থাকা অভিযুক্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ হিল কাফি, শহিদুল ইসলামসহ সাতজনকে প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে হাজির করা হয়। উল্লেখ্য, মামলার তদন্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউশনের হাতে আসে ১৯ জুন। তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় আন্দোলন চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে পাঁচজন নিহত হন এবং আরও একজন গুরুতর আহত হন। পরবর্তীতে পুলিশ তাদের লাশ ও আহত ব্যক্তিকে একটি ভ্যানে তুলে পেট্রোল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে দেয়।
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর মামলাটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রুজু করা হয়। মামলায় এখন পর্যন্ত প্রসিকিউশন যে ১১ আসামির নাম প্রকাশ করেছে, তারা হলেন—
১. মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম (সাবেক এমপি)
২. মো. শহিদুল ইসলাম (সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সাভার সার্কেল)
৩. আবদুল্লাহ হিল কাফি (সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ঢাকা জেলা)
৪. এ এফ এম সায়েদ রনি (সাবেক ওসি, আশুলিয়া থানা)
৫. মো. আরাফাত হোসেন (সাবেক পরিদর্শক, ডিবি উত্তর-ঢাকা)
৬. আবদুল মালেক (সাবেক এসআই, আশুলিয়া থানা)
৭. আরাফাত উদ্দীন (সাবেক এসআই)
৮. শেখ আবজালুল হক (সাবেক এসআই)
৯. বিশ্বজিৎ সাহা (সাবেক এসআই)
১০. কামরুল হাসান (সাবেক এসআই)
১১. মুকুল চোকদার (সাবেক কনস্টেবল)
এই ১১ জনের মধ্যে আটজন বর্তমানে কারাগারে আছেন, যাদের মধ্যে সাতজনকে আদালতে উপস্থিত করা হয়।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ৫ আগস্ট বিকেলে আশুলিয়া থানার সামনে পাঁচজনকে গুলি করে হত্যা এবং একজনকে আহত করার পর, পুলিশ প্রথমে তাদের একটি ভ্যানে তোলে। সেখান থেকে অন্য একটি পুলিশের গাড়িতে নিয়ে গিয়ে ছয়জনকেই আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়—তাদের মধ্যে একজন তখনও জীবিত ছিলেন।
নিহতদের মধ্যে যাদের পরিচয় নিশ্চিত করা গেছে, তারা হলেন:সাজ্জাদ হোসেন (সজল), আস সাবুর, তানজীল মাহমুদ সুজয়, বায়েজিদ বুসতামি, আবুল হোসেন, এছাড়া একজনের নাম-পরিচয় এখনো অজানা।
একুশে সংবাদ/আ.ট/এ.জে