২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের রাজনৈতিক সহিংসতা ও গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।
রোববার (১ জুন) দুপুরে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়ে এই নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারক। উল্লেখযোগ্যভাবে, বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এ বিচারকার্য সরাসরি টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়।
এই মামলায় অভিযুক্ত আরও একজন হলেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, যিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন। অপরদিকে, হাসিনা ও কামাল পলাতক রয়েছেন বলে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন সূত্র জানিয়েছে।
প্রসিকিউশনের তথ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ৮ হাজার ৫০০ পৃষ্ঠার বিশদ অভিযোগপত্র ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হয়েছে, যাতে মানবতাবিরোধী অপরাধসহ পাঁচটি অভিযোগ উল্লেখ রয়েছে। তদন্তে দেখা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের সময় তিনি গণহত্যার নির্দেশদাতা ও মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন।
গত ১২ মে তদন্ত সংস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবেদন জমা দেয়, যেখানে জুলাই-আগস্টের সহিংসতায় প্রায় ১,৫০০ মানুষের প্রাণহানির জন্য হাসিনাকে প্রধান দায়ী করা হয়। এর আগে ১৮ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনাল এই মামলার তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেয়। শুনানিতে প্রসিকিউশনের পক্ষে অতিরিক্ত চিফ প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম অংশ নেন।
২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর আরেক আদেশে ট্রাইব্যুনাল হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলার তদন্ত শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছিল।
জুলাই-আগস্টের ঘটনায় গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্র ও সাধারণ জনগণের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো, হত্যা ও নিপীড়নের অভিযোগ উঠে। তৎকালীন সরকারের নির্দেশে নিরাপত্তা বাহিনী এই দমন-পীড়ন চালায় বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে। প্রসিকিউশন বলছে, এই ঘটনার দায় প্রাথমিকভাবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের ওপর বর্তায়।
একুশে সংবাদ / স.ট/এ.জে