তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন থেকে উদ্ভূত আপিলের ষষ্ঠ দিনের শুনানি চলছে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে।
রবিবার (২ নভেম্বর) সকাল ৯টা ২০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়।
আদালতে বিএনপির পক্ষে শুনানি করছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। রাষ্ট্রের পক্ষে উপস্থিত আছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
এর আগে গত ২৯ অক্টোবর পঞ্চম দিনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ২১ অক্টোবর থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রথম পাঁচ দফায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও নাগরিক সংগঠনগুলোর আইনজীবীরা আদালতে যুক্তি উপস্থাপন করেন।
২৩ অক্টোবর: রিটকারী বদিউল আলম মজুমদারের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া।২৮ অক্টোবর: জামায়াতে ইসলামীপক্ষের শুনানি শেষ করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।২৯ অক্টোবর: ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিকী।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে ত্রয়োদশ সংশোধনী পাস হয় ১৯৯৬ সালে। এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে আইনজীবী এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন হাইকোর্টে রিট করেন।
২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট রায় দেন যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংবিধানসম্মত। তবে ২০০৫ সালে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়।
দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ত্রয়োদশ সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে। এরই ধারাবাহিকতায় একই বছরের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয় পঞ্চদশ সংশোধনী, যা সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপ করে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর এ রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি—তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান।
পরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামী সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, এবং মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন পৃথকভাবে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন।
এই সকল আবেদন একসঙ্গে শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়।
আজকের শুনানি শেষে আদালত পরবর্তী দিন নির্ধারণ করবেন বলে জানা গেছে। আইনজীবীরা ধারণা করছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে এই শুনানিই হবে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

