অবরোধ, দুর্ভিক্ষ আর অব্যাহত বিমান হামলায় প্রতিদিনই বাড়ছে গাজার লাশের সারি। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, শনিবারের হামলায় আরও ৬৮ জন নিহত হয়েছেন।
মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৬৪ হাজার ৪০০ মানুষ। কেবল গত ২৪ ঘণ্টায় নিহত হয়েছেন ৬৮ জন এবং আহত হয়েছেন আরও ৩৬২ জন। এতে মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৬২ হাজারের বেশি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, বহু মরদেহ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে আছে, যাদের উদ্ধার সম্ভব হচ্ছে না।
অন্যদিকে, মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ২৪ ঘণ্টায় ২৩ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ১৪৩ জন। চলতি বছরের মে থেকে এখন পর্যন্ত এ ধরনের ঘটনায় প্রাণ গেছে ২ হাজার ৩৮৫ জনের এবং আহত হয়েছেন ১৭ হাজারের বেশি মানুষ।
ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে মৃত্যুর মিছিলও দীর্ঘ হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এভাবে মারা গেছেন ৬ ফিলিস্তিনি, যার মধ্যে একজন শিশু। এ নিয়ে গত বছরের অক্টোবর থেকে ক্ষুধাজনিত মোট মৃত্যু দাঁড়াল ৩৮২ জনে, এর মধ্যে ১৩৫ শিশু।
জাতিসংঘ ইতোমধ্যেই সতর্ক করেছে—গাজার উত্তরাঞ্চল দুর্ভিক্ষে আক্রান্ত হয়েছে, যা শিগগিরই আরও দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ গত মার্চ থেকে ইসরায়েল সব সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে রেখেছে, ফলে ২৪ লাখ মানুষের এই ভূখণ্ডে খাদ্য প্রবেশ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
এদিকে গত ১৮ মার্চ থেকে নতুন করে চালানো হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও ১১ হাজার ৮০০ জনের বেশি এবং আহত হয়েছেন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। ফলে জানুয়ারিতে হওয়া যুদ্ধবিরতি কার্যত ভেঙে গেছে।
শুক্রবার গাজায় ইসরায়েলের এই সামরিক অভিযান ৭০০ দিনে গড়িয়েছে। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইতোমধ্যেই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। পাশাপাশি, গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলাও চলছে।
একুশে সংবাদ/ঢ.প/এ.জে