অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অনাহার ও অপুষ্টিজনিত কারণে আরও ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, এ নিয়ে এ ধরনের মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১২ জনে, যার মধ্যে ৯৮ জনই শিশু। শনিবার (৯ আগস্ট) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে অন্তত ৩৮ জন নিহত ও ৪৯১ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে খাদ্য সহায়তা নিতে গিয়ে ২১ জন নিহত হওয়ার তথ্যও পাওয়া গেছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, মে মাসের শেষ দিক থেকে খাদ্য সংগ্রহের পথে ১ হাজার ৩৭৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন; এর মধ্যে ৮৫৯ জন জিএইচএফ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে এবং ৫১৪ জন খাদ্যবাহী বহরের পথে। জাতিসংঘ বলছে, নিহতদের বেশিরভাগকে ইসরায়েলি সেনারা হত্যা করেছে, যদিও জিএইচএফ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এদিকে ইসরায়েল গাজা সিটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। ঘোষিত পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, আগামী ৭ অক্টোবর থেকে সামরিক অবরোধ শুরু হবে এবং তার আগে দুই মাসের মধ্যে শহরের আনুমানিক ১০ লাখ বাসিন্দাকে দক্ষিণাঞ্চলে সরিয়ে নেওয়া হবে। যুদ্ধের আগে গাজা সিটিতে প্রায় ৬ লাখ মানুষের বসবাস থাকলেও সংঘাত চলাকালে বিপুল সংখ্যক বাস্তুচ্যুত মানুষ সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন। বর্তমানে অনেকেই তাঁবু বা ধ্বংসস্তূপে পরিণত ভবনে বসবাস করছেন।
ইসরায়েলের এই পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক মহল ও দেশটির ভেতরেও ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। কিছু সামরিক কর্মকর্তা এবং গাজায় আটক ইসরায়েলি বন্দিদের পরিবারের সদস্যরা বন্দিদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ সমালোচনা উপেক্ষা করে জানিয়েছেন, এতে তাদের অবস্থান নড়বড়ে হবে না।
যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে তুলনামূলক নরম সুরে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে জানিয়েছে, গাজা দখল করা হবে কি না, তা “প্রায় পুরোপুরি ইসরায়েলের সিদ্ধান্ত”। এদিকে জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, গাজায় ইতোমধ্যেই “দুর্ভিক্ষের সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি” বিরাজ করছে এবং নতুন এই পরিকল্পনা মানবিক সংকট আরও গভীর করবে।
একুশে সংবাদ/ঢ.প/এ.জে