অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর সর্বশেষ হামলায় একদিনেই প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১০০ ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ। নিহতদের মধ্যে রয়েছে শিশুসহ ক্ষুধার্ত ত্রাণপ্রত্যাশীরাও।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) তুরস্কভিত্তিক বার্তাসংস্থা আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বুধবার গাজা জুড়ে চালানো হামলায় নিহতদের বেশিরভাগই সাধারণ মানুষ। স্থানীয় হাসপাতাল ও সংবাদ সংস্থার বরাত দিয়ে জানানো হয়, অনেকে খাদ্য ও ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন।
গাজার পূর্বাঞ্চলের শাজাইয়া এলাকায় দুটি বিমান হামলায় প্রাণ গেছে অন্তত ১৭ জনের, যাদের মধ্যে দুটি শিশুও রয়েছে। মধ্য গাজার নেৎজারিম করিডোরে ত্রাণ নিতে গিয়ে ইসরায়েলি গুলিতে নিহত হয়েছেন আরও আটজন।
রাফাহ শহরের পশ্চিমাংশেও একই পরিস্থিতি দেখা গেছে—সেখানে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে তিনজন ত্রাণপ্রত্যাশীকে। পশ্চিম গাজা শহরের একটি আবাসিক ভবনে বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন নয়জন, যাদের মধ্যে চারজন শিশু।
উত্তর গাজার জাবালিয়া আল-নাজলায় দুটি বাড়ি ধ্বংসের পর উদ্ধার করা হয়েছে তিনটি মরদেহ। ধ্বংসস্তূপে এখনো অনেকেই আটকা পড়ে থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেইর আল-বালাহ শহর ও নুসাইরাত শরণার্থী ক্যাম্পে চালানো হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও ১০ জন।
খান ইউনুসের আবাসান শহরের ধ্বংসস্তূপ থেকে এক তরুণের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে সহায়তা নিতে আসা আরও পাঁচজন নিহত হন। জাবালিয়া আল-বালাদ এলাকায় ওমারি মসজিদের কাছে বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন দুজন।
গাজা শহরে বিভিন্ন বাড়িতে হামলায় আরও ছয়জন নিহত হন, আর শাজাইয়ায় আরও একটি হামলায় প্রাণ গেছে ১২ জনের। আল-শাতি শরণার্থী ক্যাম্পে এক বাড়িতে বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন পাঁচ শিশুসহ নয়জন।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি অভিযান চলছে। আন্তর্জাতিক আহ্বান সত্ত্বেও যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন হয়নি। এ পর্যন্ত প্রায় ৫৬ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
২০২৪ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াওভ গালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা এখনও চলমান।
একুশে সংবাদ/ঢ.প/এ.জে
একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
