ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালানোর দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শনিবার (২১ জুন) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানান, ইরানের ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহান পারমাণবিক কেন্দ্রে সফল হামলা চালানো হয়েছে এবং মার্কিন যুদ্ধবিমানগুলো এরইমধ্যে আকাশসীমা ত্যাগ করেছে। খবর: বিবিসি।
এর কিছুক্ষণ পর একাধিক পোস্টে ট্রাম্প আরও লেখেন, “ফোর্দো ইজ গন”— অর্থাৎ ‘ফোর্দো ধ্বংস হয়েছে’।
এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের বি-টু স্টিলথ বোমারু বিমান ব্যবহৃত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে দেশটির কর্মকর্তাদের বরাতে। এর আগে এই বোমারু বিমানগুলো গুয়ামে মোতায়েনের খবর সামনে আসায়, তা ইরানে সম্ভাব্য হামলার পূর্বাভাস বলেই মনে করছিলেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে, ইরান সরকারও হামলার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এবং কর্মকর্তারা জানান, ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলো হামলার শিকার হয়েছে।
তেহরানভিত্তিক তাসনিম বার্তা সংস্থা জানায়, কোম প্রদেশের জরুরি ব্যবস্থাপনা দপ্তরের মুখপাত্র মর্তেজা হায়দারি জানিয়েছেন—ফোর্দোর একটি অংশে বোমার আঘাত লেগেছে।
ইসফাহানের আঞ্চলিক নিরাপত্তা উপপ্রশাসক আকবর সালেহি বলেন, “নাতাঞ্জ ও ইসফাহানে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। আমরা হামলার প্রমাণ দেখেছি।”
এই অবস্থায় ইরান তার পারমাণবিক স্থাপনাগুলো খালি করার কথা জানিয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের উপ-রাজনৈতিক পরিচালক হাসান আবেদিনি সরাসরি সম্প্রচারে বলেন, কিছু সময় আগেই ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহান থেকে উপকরণ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, “যদি ট্রাম্পের দাবি সত্যও হয়, তবুও বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি।”
হামলার পর ইরান রাষ্ট্রীয়ভাবে হুঁশিয়ারি দিয়েছে—এই অঞ্চলের প্রতিটি মার্কিন নাগরিক ও সামরিক উপস্থিতি এখন বৈধ লক্ষ্যবস্তু।
যুক্তরাষ্ট্রে এই হামলার সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে বিতর্ক। কেউ কেউ পদক্ষেপটিকে ‘সাহসী পদক্ষেপ’ হিসেবে দেখছেন, আবার অনেকেই এটিকে কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া নেওয়া `অসাংবিধানিক পদক্ষেপ` বলে সমালোচনা করেছেন।
একুশে সংবাদ/এ.ট/এ.জে