নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল উপশহরের ১২ নম্বর সেক্টর এলাকায় পিঠা ব্যবসায়ী শাকিলা ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে চরম অভিযোগ তুলে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী ও আশপাশের ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকালে পূর্বাচল উপশহরে ১২ নম্বর সেক্টরে এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীরা একত্র হয়ে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা অভিযোগ করেন, শাকিলা দীর্ঘদিন ধরে পিঠা বিক্রির আড়ালে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। তার বিরুদ্ধে খাবারের দাম বেশি রাখা, ক্রেতাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, প্রতিবাদ করলে গালিগালাজ ও শারীরিক নির্যাতনের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া, পিঠার দোকান ঘিরে মাদকসেবীদের আড্ডা, রাতে অসামাজিক কার্যকলাপ এবং প্রতিনিয়ত ঝগড়া-বিবাদের ঘটনায় এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, গত সোমবার রাতে মদ্যপ অবস্থায় শাকিলার স্বজন দিপু, রাসেল, শাকিলসহ আরও কয়েকজন মিলে ‘নিপা পিঠাঘর’ নামে একটি নারীর দোকানে পিঠা খেতে গেলে পিঠা দিতে বিলম্ব হওয়ায় তারা দোকানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর শুরু করে। প্রতিবাদ করলে দোকানদার নারীকে বেধড়ক মারধর করে, এমনকি তার শরীরের কাপড়ও টেনে ছিঁড়ে ফেলে। তার চিৎকারে খালা ছুটে এলে তাকেও আঘাত করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, ঘটনাস্থলে থাকা পূর্বাচল পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলমের কাছ থেকে পিস্তল ছিনিয়ে নিয়ে ওই নারীকে আঘাত করা হয়, ফলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে দুইজন হামলাকারীকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিলেও কিছুক্ষণ পরই পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ সহযোগিতা করেনি। বরং অভিযুক্তদের পক্ষ নিয়ে সাফাই গেয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। শেষমেশ বুধবার নারায়ণগঞ্জ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী।
এলাকাবাসীর দাবি, পিঠা ব্যবসার আড়ালে চলা এসব অপকর্ম বন্ধে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। একই সঙ্গে শাকিলা ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে পূর্বাচল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই এবং অভিযুক্তদের আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে আসি। পরে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের অনুরোধে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশের পিস্তল ছিনিয়ে নিয়ে হামলা করার অভিযোগ সত্য নয়, তবে অভিযুক্তরা মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন।’
নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেহেদী ইসলাম বলেন, ‘ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন। পুলিশি দায়িত্বে অবহেলা বা পিস্তল ছিনতাইয়ের মতো কোনো ঘটনা ঘটেছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একুশে সংবাদ/না.প্র/এ.জে