ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় হামাস উৎখাত ও জিম্মি উদ্ধারের নামে ইসরায়েলের চালানো অবিরাম হামলার মাত্রা আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নেতানিয়াহু প্রশাসন। গাজার আকাশ ও মাটিতে চালানো আগ্রাসন যেন এখন পূর্ণমাত্রায় রূপ নিতে চলেছে।
শনিবার (৩ মে) ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, ইসরায়েলের নিরাপত্তা ক্যাবিনেট ইতোমধ্যে গাজায় নতুন সামরিক পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছে। পরিকল্পনাটি এখন পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের অপেক্ষায়, যা কেবল সময়ের ব্যাপার বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইনেত-কে এক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেন, “হামাস যতদিন জিম্মিদের ছেড়ে দেবে না, ততদিন আমরা গাজায় আমাদের সামরিক তৎপরতা বাড়াতেই থাকবো।”
এর আগে, বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, “আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হামাসের পরাজয়। আমরা জিম্মিদের উদ্ধারের চেষ্টা করছি, তবে এই যুদ্ধের পরিণতি হবে হামাসশূন্য গাজা।”
যুদ্ধবিরতি পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মিশর ও কাতার নতুন করে উদ্যোগ নিলেও তাতে সাড়া মেলেনি। উভয় পক্ষ—ইসরায়েল ও হামাস—নিজেদের অবস্থানে অনড়।
নেতানিয়াহুর কার্যালয় এক বিবৃতিতে দাবি করে, মিশরের প্রস্তাব তারা প্রত্যাখ্যান করেনি, বরং চুক্তির পথে প্রধান বাধা হামাসই।
অন্যদিকে, হামাস জানিয়েছে, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার না হলে কোনো বন্দি বিনিময় সম্ভব নয়।
মৃত্যু আর ধ্বংসের উপত্যকা গাজা
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া আগ্রাসনে প্রাণ হারিয়েছেন ৫২ হাজার ৪৬১ জন ফিলিস্তিনি।
নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
গত ১৮ মার্চ থেকে নতুন করে শুরু হওয়া হামলায় ২৩০০ জন নিহত ও ৫৮০০ জন আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলের আকাশ ও স্থল অভিযান এবং ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ থাকায় গাজাবাসীদের জীবনে নেমে এসেছে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। নিরাপদ কোনো স্থান অবশিষ্ট নেই, খাদ্য ও ওষুধের সংকটে কাতর গাজা এখন কার্যত এক মৃত্যুপুরী।
একুশে সংবাদ/আ.ট/এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :