AB Bank
ঢাকা সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

লিবিয়ায় কেন এত প্রাণহানি?


Ekushey Sangbad
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০১:২৮ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
লিবিয়ায় কেন এত প্রাণহানি?

লিবিয়ার দেরনাবাসীর জন্য বিভিষীকার মতো ছিল গত সোমবার রাতটি। সবাই তখন ঘুমে, রাত তিনটার মতো বাজে, হঠাৎ বিকট শব্দে ভেঙে যায় শহররক্ষা বাঁধটি। তারপর পাহাড়ি ঢলের মতো প্রবল বন্যায় ভেসে যায় দেরনাসহ উপকূলীয় শহরগুলো। ভারী বৃষ্টিপাতের সঙ্গে ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল আঘাত হানার পর উপকূলীয় অঞ্চল দেরনায় ২৪ ঘণ্টায় ৪১৪ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

সিএনএন জানাচ্ছে, প্রলয়ংকরী এ বন্যায় শুধু দেরনাতেই ৫ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং হাজার হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। জাতিসংঘ বলছে, ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের তাণ্ডব ও বন্যায় লিবিয়ায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১১ হাজার ৩০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে কমপক্ষে ১০ হাজার ১০০ মানুষ।

স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন, সচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেরনা। সেখানে অন্তত ১ লাখ মানুষ বাস করতেন। বন্যার পর অন্তত ১০ হাজার মানুষ নিখোঁজ হয়েছেন। তবে এ পরিসংখ্যান সিএনএন স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে।

ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অফ দ্য রেড ক্রসের তথ্যমতে, প্রায় ৭ মিটার উঁচু ঢেউয়ের তোড়ে বহু ঘরবাড়ি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। নিহত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শক্তিশালী ঝড়, বহুদিনের পুরোনো বাঁধ, দুর্বল অবকাঠামো ও পূর্ব সতর্কতা না থাকায় এত বিপুল সংখ্যক প্রাণহানি ঘটেছে।

How to support Storm Daniel flood victims in Libya | Climate Crisis News |  Al Jazeera

পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ ধরনের বিপর্যয়কর ও প্রাণঘাতি ঝড়-বৃষ্টির ঘটনা বাড়ছে। যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব রিডিংয়ের হাইড্রোলজি বিভাগের অধ্যাপক হান্না ক্লোক বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝড়গুলো আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে।’

দেরনা আগে থেকেই একটি বন্যাপ্রবণ এলাকা। তবে এবারের বন্যা অতীতের রেকর্ডগুলোকে ছাড়িয়ে গেছে। লিবিয়ার সেবহা বিশ্বিবদ্যালয়ের একটি গবেষণা বলছে, ১৯৪২ সালের পর থেকে বন্যারোধী বাঁধ ভেঙে অন্তত পাঁচটি মারাত্মক বন্যা হয়েছে। সর্বশেষ বন্যাটি ছিল ২০১১ সালে।

গত সোমবার যে দুটি বাঁধ ভেঙ গেছে, সেগুলো অন্তত ৫০ বছর আগের। একটি ১৯৭৩ সালে এবং অন্যটি ১৯৭৭ সালে নির্মাণ করা হয়েছিল। দেরনা শহরের ডেপুটি মেয়র আহমেদ মাদ্রৌদ কতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরাকে বলেন, ২০০২ সালের পর এই বাঁধগুলো আর রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি।

যুক্তরাজ্যের রিডিং বিশ্বিবদ্যালয়ের ক্লাইমেট রিস্কস অ্যান্ড রেজিলিয়েন্সের অধ্যাপক লিজ স্টিফেনস সিএনএনকে বলেন, ঝড় ও ভারী বৃষ্টিপাত মোকাবিলায় বাঁধগুলো সংস্কার করা হয়েছিল কিনা, সে ব্যাপারে গুরুতর প্রশ্ন তোলা যেতে পারে। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে বাঁধগুলো ভেঙে না গেলে এত প্রাণহানি ঘটত না।

গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের প্রধান পেটেরি তালাস এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সময়মতো সতর্কতা গ্রহণ করলে দেরনায় বেশিরভাগ হতাহতের ঘটনা এড়াতে যেত। যদি একটি আবহাওয়া পরিষেবা থাকত, তবে তারা সতর্কতা জারি করত এবং জরুরীভিত্তিতে জনগণকে সরিয়ে নিতে পারত। তাহলে এত হতাহতের ঘটনা ঘটত না।’

Libya flood disaster: scale of the catastrophe must bring the two warring  factions together

পেটেরি তালাস আরও বলেন, বন্যারোধী বাঁধগুলো আরও উন্নত করার জন্য লিবিয়া সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চেয়েছিল ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও)। কিন্তু দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে তা করা সম্ভব হয়নি।

যুক্তরাজ্যের রিডিং ইউনিভার্সিটর অধ্যাপক হান্না ক্লোক বলেন, অপ্রত্যাশিত দুর্যোগ থেকে বাঁচার জন্য আমাদের অবশ্যই প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন। এ জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকেও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে এবং সতর্কতামূলক প্রস্তুতি নিতে হবে।


একুশে সংবাদ/এসআর

Link copied!