গাজা উপত্যকায় চলমান সংঘর্ষে ৬০ দিনের জন্য সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল—এমন দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, এই সময়ের মধ্যে সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হবে।
বুধবার (২ জুলাই) ভোরে নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প জানান, “ইসরায়েল ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে প্রয়োজনীয় শর্তে রাজি হয়েছে। এই সময় আমরা যুদ্ধ স্থায়ীভাবে থামাতে সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করব।”
তিনি আরও লেখেন, “কাতার ও মিসরের ভূমিকা এখানে গুরুত্বপূর্ণ। তারা শান্তির জন্য অনেক চেষ্টা করছে। চূড়ান্ত প্রস্তাব তাদের পক্ষ থেকেই আসবে বলে আশা করছি। মধ্যপ্রাচ্যের কল্যাণে হামাস যদি এই চুক্তি গ্রহণ করে, সেটি হবে সঠিক সিদ্ধান্ত—না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।”
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ‘টাইমস অব ইসরায়েল’ জানিয়েছে, ট্রাম্প এমনভাবে মন্তব্য করেছেন যেন তিনি দুই পক্ষকেই সন্তুষ্ট রাখার কৌশল নিচ্ছেন এবং যুদ্ধের স্থায়ী অবসানের প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছেন।
আরব মধ্যস্থতাকারীরা জানায়, যুদ্ধবিরতির চূড়ান্ত খসড়া নিয়ে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যে মতপার্থক্য রয়েছে, তা দূর করতে তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে বলেছেন, “আমরা একটি চুক্তির সম্ভাবনা দেখছি। জেরুজালেমের পক্ষ থেকে আমরা আগ্রহী। মধ্যপ্রাচ্যে নতুন বাস্তবতা তৈরির লক্ষ্যে আমাদের নাগরিক ও সেনারা অনেক মূল্য দিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “ইসরায়েল শান্তির পরিধি বাড়াতে চায়। আব্রাহাম চুক্তির আওতায় আরও প্রতিবেশী রাষ্ট্র, যেমন—সিরিয়া ও লেবাননকেও এই শান্তিপক্রিয়ায় যুক্ত করতে আগ্রহী। একই সঙ্গে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে।”
উল্লেখ্য, গত কয়েক মাস ধরে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে ৬০ দিনের সাময়িক যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চলছিল, যা মার্কিন প্রতিনিধি স্টিভ উইটকোফের মাধ্যমে প্রস্তাব করা হয়েছিল। ট্রাম্পের বক্তব্য সম্ভবত সেই আলোচনার দিকেই ইঙ্গিত।
তবে আলোচনায় দীর্ঘদিন অচলাবস্থা বিরাজ করছিল। কারণ ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির পরও গাজায় ভবিষ্যতে হামলার অধিকার রাখতে চায়, যা হামাসের আপত্তির মুখে পড়ে। হামাসের অবস্থান, তারা স্থায়ী যুদ্ধবিরতির নিশ্চয়তা ছাড়া সাময়িক কোনো চুক্তিতে যাবে না।
একুশে সংবাদ/আ.ট/এ.জে