শেরপুরে মাছ চাষের পুকুরে ইঁদুর মারা কলের ফাঁদ পেতে পাখি হত্যার অভিযোগে ফাঁদ জব্দ সহ দুইজনকে আটক করে সদর উপজেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার(২৭ নভেম্বর) বিকেলে শেরপুর শহরের উত্তর মীরগঞ্জ এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন ওই এলাকার মৎস্যচাষী সামিউল আলম (৪২) ও পাখি শিকারী আব্দুর রহমান (৭৫)। পরে দোষ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা এবং ভবিষ্যতে আর পাখি শিকার না করার অঙ্গীকার করে অন্যদেরকেও সচেতন করার মুচলেকা দিলে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) ইশতিয়াক মজনুন ইশতি এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন।
উপজেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শেরপুর শহরের মীরগঞ্জ এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরে ফাঁদ পেতে শালিক, বক, মাছরাঙা সহ বিভিন্ন পাখি শিকারের অভিযোগ শোনা যাচ্ছিলো। বৃহস্পতিবার দুপুরে ‘প্রস্ফুটিত শেরপুর’ নামে একটি ফেসবুক পেজে শহরের মীরগঞ্জ এলাকায় মাছ চাষের একটি পুরে কেচি ফাঁদ পেতে বক, মাছরাঙা পাখি হত্যার দু’টি ছবি প্রকাশিত হয়। বিষয়টি স্থানীয় একজন সাংবাদিকের নজরে এলে তাৎক্ষনিকভাবে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভুঁইয়াকে অবহিত করা হয়।
তাঁর নির্দেশে বিকেলে সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভুমি) ইশতিয়াক মজনুন ইশতি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেন। সাংবাদিক জাহিদুল খান সৌরভ এবং শেরপুর জেলা প্রকৃতি ও জীবন ক্লাবের সমন্বয়ক হাকিম বাবুল এ অভিযান পরিচালনায় সার্বিক সহযোগিতা করেন। এসময় সদর এসিল্যান্ড অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা তাঁদের সাথে ছিলেন।
অভিযানকালে শহরের উত্তর মীরগঞ্জ এলাকায় সামিউল আলমের মাছ চাষের পুকুরের মাঝখানে বাঁশের খুঁটির ওপরে লাগানো অবস্থার ইঁদুর মারা কলের ফাঁদ জব্দ করা হয় এবং সেখান থেকে একটি মাছরাঙ্গা ও একটি বক পাখির মরদেহ জব্দ করা হয়। ঘটনাস্থলে পুকুরের ইজারাদার মাছ চাষী সামিউল আলম এবং তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পাখি শিকারী আব্দুর রহমানকে আটক করা হয়। আটককৃত দুইজন ফাঁদ পেতে পাখি শিকারের বিষয়ে নিজেদেও দোষ স্বীকার কওে নি:শর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
একইসাথে তারা ভবিষ্যতে আর পাখি শিকার আর না করার অঙ্গীকার করেন এবং অন্যদেরকেও এ বিষয়ে সচেতন করার বিষয়ে লিখিত মুচলেকা দিলে পরে তাদে ছেড়ে দেওয়া হয়। এসময় উপস্থিত এলাকাবাসীকে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা এবং জীববৈচিত্র সংরক্ষণে সচেতনতামুক বার্তা প্রদান করা হয়।
সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) ইশতিয়াক মজনুন ইশতি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আটককৃতরা প্রথমবার ফাঁদ পেতে পাখি শিকারের দোষ স্বীকার ও ক্ষমা প্রার্থনা করেছে। ভবিষ্যতে আর এ ধরনের অপরাধে লিপ্ত হবে না মর্মে অঙ্গীকার করে লিখিত মুচলেকা দেওয়ায় তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এ বন্যপ্রাণী ও পাখি সুরক্ষায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
একুশে সংবাদ//এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

