রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে গিয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সায়মা হোসাইনের মৃত্যুর ঘটনায় প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার শেষ দিনে বিক্ষোভ করেছেন তার সহপাঠীরা।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড অবরোধ করে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা।
বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন— ‘তুমি কে, আমি কে, সায়মা, সায়মা’, ‘আমার বোন মরল কেন, প্রশাসন জবাব দে’, ‘এই মুহূর্তে দরকার, রাবি মেডিকেল সংস্কার’, ‘অবহেলায় শিক্ষার্থী মরে, প্রশাসন কী করে’ ইত্যাদি।
শিক্ষার্থীরা তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পাশাপাশি আরও তিনটি দাবি জানান। দাবিগুলো হলো—
১. সায়মার পরিবারকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান;
২. বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রের সংস্কার ও উন্নত সেবা নিশ্চিত করতে রোডম্যাপ ঘোষণা;
৩. সুইমিংপুলের একটি অংশ বা গ্যালারি সায়মার নামে নামকরণ।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১–২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল আজিজ বলেন, “সায়মা হোসাইনের মৃত্যু কোনোভাবেই স্বাভাবিক নয়, এটি প্রশাসনের অবহেলার কারণে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে আন্দোলন করছি। যদি তদন্ত প্রতিবেদনে গড়িমসি বা অবহেলা দেখা যায়, তাহলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।”
আরেক শিক্ষার্থী মোছা. আসমা আক্তার বলেন, “আমরা আজকের প্রতিবেদনের অপেক্ষায় আছি। যদি ফলাফল আশানুরূপ না হয়, তবে আরও কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলব এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অকার্যকর ঘোষণা করব।”
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) সাংস্কৃতিক সম্পাদক জায়িদ হাসান জোহা বলেন, “আমরা সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একমত। তদন্তের ফলাফল দ্রুত প্রকাশ ও দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারসহ বিভিন্ন সেক্টরে সংস্কার জরুরি। সুইমিংপুলে প্রশিক্ষকের সামনে যদি শিক্ষার্থী মারা যায়, আর মেডিকেল সেন্টারে অক্সিজেনের অভাবে প্রাণহানি ঘটে, তাহলে তা চরম অব্যবস্থাপনা। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।”
গত রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা যান সমাজবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষবর্ষের শিক্ষার্থী ও মন্নুজান হলের আবাসিক ছাত্রী সায়মা হোসাইন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ায়।
ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে, যাদের তিন দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও ১০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

