কাতারে ঘুমন্ত অবস্থায় চট্টগ্রামের বাঁশখালীর যুবক আসিফ মুহাম্মদ সায়েম (২৬)**কে নির্মমভাবে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। সোমবার (২০ অক্টোবর) গভীর রাতে কাতারের একটি বাসায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতের পরিবার ধারণা করছে, সায়েমের এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।
নিহত সায়েম বাঁশখালীর গন্ডামারা ইউনিয়নের দক্ষিণ গন্ডামারা তালুকদার বাড়ির মোহাম্মদ মোজাম্মেল হকের দ্বিতীয় পুত্র। চার বছর আগে জীবিকার তাগিদে তিনি কাতারে পাড়ি জমান। তিনি পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্য ছিলেন।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কাতারে একই বাসায় আরও কয়েকজন বাংলাদেশি প্রবাসী থাকতেন। সোমবার রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়ার পর দুর্বৃত্তরা সায়েমের গলায় ধারালো অস্ত্র চালায়। সহকর্মীরা সকালে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে বিছানায় পড়ে থাকতে দেখেন। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়। বর্তমানে মরদেহটি কাতার পুলিশের হেফাজতে সংরক্ষিত রয়েছে।
পরিবার জানায়, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে—হত্যার আগে সন্দেহভাজন এক বন্ধু সায়েমের কক্ষে প্রবেশ করেছিল, এরপর থেকেই সে পলাতক। কাতার পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে এবং ফুটেজ বিশ্লেষণ করে হত্যাকারীকে শনাক্তের চেষ্টা করছে।
নিহতের পিতা মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার ছেলেকে খুন করে ফেলল! সংসারের একমাত্র ভরসা ছিল সে। তার রক্তের বিচার চাই।”
নিহতের ভাই-বোনরাও শোকে ভেঙে পড়েছেন। গ্রামের বাড়িতে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। এলাকাবাসী দ্রুত মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন।
বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম বলেন, “ঘটনার বিষয়ে আমরা অবগত হয়েছি। সরকারি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও কাতারস্থ দূতাবাসের সহযোগিতায় মরদেহ দেশে আনার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
স্থানীয়রা জানান, সায়েম ছিলেন শান্ত, পরিশ্রমী ও নম্র স্বভাবের ছেলে। তার অকাল মৃত্যুতে এলাকায় শোকের আবহ বিরাজ করছে।
সায়েমের শোকাহত পরিবার সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে, দ্রুত তার মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনা হোক এবং হত্যাকারীর বিচার নিশ্চিত করা হোক।
একুশে সংবাদ/এ.জে