নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা নদীর টি-বাঁধে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের ইমারজেন্সি ওয়ার্ক দ্রুত সম্পন্ন করার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন নদী পাড়ের বাসিন্দারা। শনিবার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ঝাড় সিংহেশ্বর গ্রামে তিস্তা নদীর এক নম্বর ওয়ার্ড টি হেডে স্থানীয়রা ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধে ঘন্টাব্যাপি মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে স্থানীয় বাসিন্দা বীরমুক্তিযোদ্ধা হবিবর রহমান, ছমির আলী, আব্দুল হাকিমসহ অনেকে অভিযোগ করেন, জনস্বার্থে তিস্তা নদীর চর থেকে বালু উত্তোলন করে টি-বাঁধ ভাঙন প্রতিরোধে চলমান কাজ হঠাৎ বন্ধ করে দিয়েছেন বিজিবি কালীগঞ্জ বিওপির সুবেদার আনোয়ারুল হক। অথচ একই এলাকায় বিজিবির নতুন ক্যাম্প নির্মাণ, এনজিও কর্তৃক ভিটে বাড়ি উঁচু করা, কবরস্থান উঁচু করার মতো ব্যক্তিগত কাজে দীর্ঘদিন ধরে মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হলেও তখন কিছু বলা হয়নি।
গত ৫ অক্টোবর উজানের ঢল ও ভারি বর্ষণে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় বাঁধটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই থেকে এলাকার মানুষ আতঙ্কে নিদ্রাহীন জীবনযাপন করছেন। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধটির কাজ দ্রুত সম্পন্ন না হলে যে কোনো মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে এলাকার শতাধিক বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীতে বিলিন হয়ে যেতে পারে। তাই স্থানীয়রা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।
কাজের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স শাহাদাত হোসেন চৌধুরীর প্রতিনিধি সামিউল হাসান শিমুল জানান, ২৫০ মিটার কাজের মধ্যে মাত্র ৫০ মিটার কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর বিজিবি কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। ১৭৫ থেকে ২৫০ কেজির ব্যাগগুলো স্থানান্তর করা গেলেও ১০ ফিট জিও টিউব স্থানান্তর করা সম্ভব নয়। এই কাজ অবশ্যই কাজের স্থলেই করতে হয়। সারাদেশে ইমারজেন্সি ওয়ার্ক এভাবেই সম্পন্ন করা হয়।
বিজিবি কালীগঞ্জ বিওপি ক্যাম্পের সুবেদার আনোয়ারুল হক বলেন, নদী থেকে বালু ও মাটি উত্তোলনের কোনো বৈধ অনুমতি না থাকায় কাজ বন্ধ করা হয়েছে। “আপনারা ডিসি স্যার বা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে আসলে কাজ করা সম্ভব হবে।”
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া পওর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, বিজিবি মাটি কাটতে না দেয়ায় কাজ বন্ধ রয়েছে। আমাদের যে জিও টিউব ব্যাগ আছে, তা মেশিন দিয়ে কাজের স্থলেই ভরাট করতে হয়। মাত্র তিনদিন সময় পেলেই কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব। বাঁধটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় কাজ দ্রুত না হলে ডিমলা সদরেও পানি প্রবাহিত হতে পারে।
একুশে সংবাদ/এ.জে