মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল শহরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন বাসায় চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ব্যাপকভাবে বেড়ে চলেছে। শনিবার ভোর রাতে শহরের হবিগঞ্জ রোডের দুইটি এবং মৌলভীবাজার রোডের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চোরেরা তালা ভেঙে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও বিভিন্ন মালামালসহ চার লক্ষাধিক টাকার মালামাল চুরি করে।
একই রাতে শহরতলীর উত্তর ভাড়াউড়া ও মাস্টারপাড়া এলাকায় দুইটি বাড়িতেও চুরি সংঘটিত হয়। এসময় চোরেরা নগদ ৫০–৬০ হাজার টাকা এবং তিনটি মোবাইল ফোন চুরি করে।
হবিগঞ্জ রোডের রহমান স্যানিটারী ওয়ারের ম্যানেজার শাহিন মিয়া জানান, “ভোর রাতে চোরেরা দোকানের তালা ও ছাটা ভেঙে নগদ দেড় লাখ টাকাসহ সাড়ে তিন লাখ টাকার মালামাল নিয়ে গেছে।” মৌলভীবাজার রোডের কাশেম স্টোরের আকিব আহমেদ জানান, “দোকানের ছাটায় লাগানো ৫টি তালা ভেঙে নগদ ২৫ হাজার টাকাসহ প্রায় দেড় লাখ টাকার মালামাল চুরি হয়েছে।”
শহরের সপ্ন ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের কর্মচারী কৃষ্ণ উড়ান জানান, “চোরেরা দোকানের বড় দুইটি এসির পাইপ চুরি করেছে।”
উত্তর ভাড়াউড়া এলাকার সচেতন নাগরিক কমিটি-টিআইবি শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সাবেক সভাপতি দ্বীপেন্দ্র ভট্টাচার্য জানান, “ভোর ৩টার সময় আমার বাসায় চুরি হয়েছে। চোরেরা আলমিরার ড্রয়ার ভেঙে নগদ ৫০–৬০ হাজার টাকা ও তিনটি মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে। ৯৯৯ হটলাইনে পুলিশ সহযোগিতা চাইলে জানানো হয়, পুলিশ ব্যস্ত রয়েছে, পরে আসবে। তবে দুপুর ২টা পর্যন্ত কেউ ঘটনাস্থলে আসে নি।”
এর আগে শুক্রবার রাতেও শহরতলীর মণিপুরী রামনগর এলাকায় শিক্ষক হাবিবুর রহমানের বাসায় চুরি হয়। চোরেরা রান্নাঘরের চিমনি দিয়ে প্রবেশ করে আলমিরা ভেঙে ৩ ভরি স্বর্ণ, নগদ ৪০ হাজার টাকা এবং একটি ল্যাপটপ চুরি করে। এছাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিনের বাসায় গত ২৮ সেপ্টেম্বর চুরি হয়, যেখানে পাঁচ ভরি স্বর্ণ, আইফোন ১৬ প্রোম্যাক্স এবং নগদ ৩০ হাজার টাকার মালামাল চুরি হয়েছে।
গত ৫ অক্টোবর রাত ৯টার দিকে দুই ব্যবসায়ী আফজল মিয়া ও ফয়সল মিয়া ছিনতাইয়ের শিকার হন। ছিনতাইকারীরা তাদেরকে ছুরিকাঘাত করে নগদ ৩ লাখ টাকা নিয়ে যায়। চলতি মাসে শহর-শহরতলী থেকে সিএনজি অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল চুরির ঘটনাও ঘটেছে।
শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, “গত মাসে ছিনতাইয়ের ঘটনায় আসামীকে গ্রেফতার করেছি। চুরির ঘটনাগুলো তদন্তাধীন। প্রত্যেক চোরকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হবে।” তিনি জানান, ভুক্তভোগী ৯৯৯ হটলাইনে অভিযোগ জানালেও পুলিশি সেবা কিছুটা দেরিতে গেছে।
সহকারী পুলিশ সুপার (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সার্কেল) মো. ওয়াহিদুজ্জামান রাজু বলেন, “আমি সদ্য শ্রীমঙ্গলে যোগদান করেছি। পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। চুরি-ছিনতাই বন্ধে গভীর রাতেও টহল চালানো হচ্ছে। দ্রুততম সময়ে চোরদের আইনের আওতায় আনা হবে।”
একুশে সংবাদ/এ.জে