কুয়াশার ফিনফিনে ঘোমটা টেনে এল হেমন্ত। যেন আলো লাগলেই ঘুম ভেঙ্গে যায়। হেমন্তের শুভ্রতা ও নান্দনিক পালা বদলের ছোঁয়া কালীগঞ্জের প্রকৃতিতে পৌছে দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা।
শিউলিঝরা তারাভরা রাতে হেমন্ত প্রকৃতি লুটিয়ে পড়ে হলুদ ধানের খেতে। অফুরন্ত লাবণ্য আর স্নিগ্ধতার আঁচল বিছিয়ে বিদায় নিয়েছে শরৎ। এসেছে সেই ঋতু, যার পদধ্বনি বড় শান্ত, কিন্তু যার স্পর্শে প্রকৃতি পায় পরিপূর্ণতার সোনারং—প্রিয় হেমন্ত। কার্তিকের দ্বিতীয় দিনে হেমন্তের আগমনী বার্তা নিয়ে কুয়াশার নরম ঘোমটা উঠেছে প্রকৃতির মুখে।
বাংলার চিরায়ত ছয় ঋতুর মধ্যে হেমন্ত যেন শরৎ ও শীতের মধ্যে এক সেতুবন্ধন। ধানখেতের মাঝে সবজি চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন কৃষকরা। কিছু দিন গেলে পাকতে শুরু করবে আমন ধান। গ্রামীণ জনপদে হেমন্তেই যেন শুরু হয়ে গেছে শীতের আমেজ। সন্ধ্যার পর রাতভর ঝরছে হালকা কুয়াশা, যা থাকে সকাল আটটা থেকে নটা অবধি। রাতের তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে।
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার ভাদার্ত্তী এলাকায় সকালে হাঁটতে বের হওয়া স্কুল শিক্ষক কাজী কেরামত (৫৪) বলেন,“ঘন কুয়াশা দেখে মনে হচ্ছে শীত নেমে এসেছে। রাজধানী ঢাকার আশেপাশের জেলা ও থানা শহরের বাতাসেও এখন হেমন্তের মিষ্টি আবেশ ছড়িয়ে পড়েছে।”
হে মন্তের ভোরের বাতাস তার শীতল স্পর্শের বার্তা বহন করছে। সকালবেলায় ঘাসের ডগায়, শিউলি ফুলের পাপড়িতে জমে থাকা শিশিরকণা সূর্যের সোনালি আলোয় মুক্তার মতো ঝিকমিক করে ওঠে। গ্রামের পুকুর ও নদীর ঘাটে শিশুরা খেলা করছে; কেউ জল ছিটিয়ে হাসছে, কেউ শাপলা ছিঁড়ে আনে। দূরে কাকের কা কা ডাক ও কাশফুলের দোলা প্রকৃতির সঙ্গীতের মতো মনে হচ্ছে।
হেমন্ত ঋতু আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবন বড় সুন্দর, জীবন রঙিন, এবং প্রতিটি মুহূর্তে লুকিয়ে আছে এক অপার সম্ভাবনা। এই নরম আলো ও শীতল হাওয়ায় মানুষ যেন নিজেকে খুঁজে পায় নতুন করে।
একুশে সংবাদ/এ.জে