নওগাঁর নিয়ামতপুরে পূজা মণ্ডপে বক্স বাজানোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে চারজন আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন শ্রী স্বপন হাওলাদার (৫৫), শ্রী শয়ন হাওলাদার (৪০), শ্রী অর্জুন হাওলাদার (৩৬) ও শ্রী সুপ্রজিৎ (২৫)। এ ঘটনায় শ্রী দিজেন চন্দ্র কবিরাজ (৫৮)কে পুলিশ আটক করেছে।
অভিযোগে জানা যায়, অর্জুন বাদী হয়ে শ্রী কনক (৩২), শ্রী অমৃত (২৫), শ্রী দিজেন চন্দ্র কবিরাজ (৫৮) ও শ্রীমতী গীতা রানী (৫০)কে অভিযুক্ত করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১১ টার দিকে উপজেলার শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের দারাজপুর (হিন্দু পাড়া) গ্রামের বারোয়ারী দূর্গা মন্দিরে।
আহতরা হলেন মৃত রূহিনী হাওলাদারের ছেলে শ্রী স্বপন হাওলাদার, শ্রী স্বপন হাওলাদারের ছেলে শ্রী সুপ্রজিৎ, মৃত লক্ষণ হাওলাদারের ছেলে শ্রী শয়ন হাওলাদার ও শ্রী অর্জুন হাওলাদার।
আটককৃত ব্যক্তি হলেন একই গ্রামের মৃত ভিম চন্দ্রের ছেলে শ্রী দিজেন চন্দ্র কবিরাজ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকালে ভিকটিম কনকের বোন অন্তরা পূজা মণ্ডপের সামনে সহপাঠীদের সঙ্গে নাচানাচি করছিলেন। এ নিয়ে কনক তার বোনকে মারধর করেন। এক পর্যায়ে কনকের বাবা স্থানীয় বিএনপির নেতা খলিলুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে, খলিলুর রহমান মিমাংসার জন্য উপস্থিত হলে কনক তাঁকে ধাক্কা দেন। এরপর খলিলুর রহমানের অনুসারীরা কনককে মারধর করে।
রাতে পূজা কমিটির লোকজন কনককে বক্স বন্ধ রাখতে বললে কনক উত্তেজিত হয়ে যায়। এরপর পূজা চলাকালীন রাতের বেলা কনক ও পরিবারের সদস্যরা বৈদ্যুতিক বাতি নিভিয়ে দেশীয় অস্ত্র, ঘুর ও হাসুয়া দিয়ে হামলা চালায়। এতে চারজন গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নারী বলেন, “যেখানে মন্দির রয়েছে, সেখানে জায়গার মালিক দিজেন। জায়গার গরম দেখিয়ে কনক কয়েকবার প্রতিমা ভাঙ্গার চেষ্টা করেছে। পারিবারিক কলহের জের ধরে রাতে আলো নিভিয়ে আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে। চারজন গুরুতর আহত হয়েছেন, আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।”
শ্রী সুকেশ বলেন, “রাতে হঠাৎ আলো নিভে যায়। কিছুক্ষণ পর চিৎকারের শব্দ শুনি। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি চাকু ও হাসুয়া দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করছে। পরে তারা পালিয়ে যায়। আহতদের রক্তাক্ত অবস্থায় মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। আমরা সুষ্ঠু বিচার চাই।”
নিয়ামতপুর থানার ওসি হাবিবুর রহমান জানান, “মন্দিরে হামলার ঘটনায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। একজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। আটককৃত ব্যক্তিকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হবে। অন্য আসামিদের আটকের জন্য পুলিশি অভিযান চলমান রয়েছে।”
একুশে সংবাদ/এ.জে