সুন্দরবন উপকূলীয় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ৪ লাখ মানুষের সুপেয় খাবার পানির অভাব দেখা দিয়েছে। স্থানীয় ভুক্তভোগীরা সুপেয় নিরাপদ পানির অভাবে প্রতিনিয়ত নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। সরকারিভাবে খাস পুকুর সংস্কার ও পিএসএফ নির্মাণ করে এখনই পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন সরকারের দায়িত্বশীল সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সুন্দরনের কোল ঘেষা পানগুছি নদীর তীরবর্তী এই উপজেলাটি ১৬টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত হলেও ভৌগলিক অবস্থানে ৪৩৮ বর্গকিলোমিটার (১৬৯ বর্গমাইল) আয়তনে বিস্তৃত। এখানে প্রায় ৪ লাখ মানুষ বসবাস করছে। অতিরিক্ত লবণাক্ততা ও সুপেয় পানির অভাবে এই জনপদের মানুষের জীবনযাত্রা দিন দিন ব্যাহত হচ্ছে। কৃষি নির্ভরশীল ফসলী জমিতে একাধিক ফসল উৎপাদনে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
১৯৮০-এর দশকে খাবার পানি সংগ্রহে গ্রামীণ জনপদের মানুষ পুকুরের পাশাপাশি টিউবওয়েল ব্যবহার করতেন। পরবর্তীতে টিউবওয়েলগুলোতে আর্সেনিক ও অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। হাজার হাজার টিউবওয়েল অকেজো হয়ে গেছে। খাবার পানি উপযোগী ছোট-বড় ২১টি পুকুর থাকলেও সরকারি খাস পুকুর শতাধিক। তাও সংস্কার ও পিএসএফ নির্মাণ না হওয়ায় ব্যবহার অনুপযোগী। মাইলের পর মাইল পায়ে হেটে ও নৌকায় পানি সংগ্রহ করছেন গ্রামের সাধারণ মানুষ। পিএসএফ না থাকার কারণে সরাসরি পুকুর ও খাল থেকে পানি নিয়ে ফুটিয়ে পান করছেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা।
বহরবুনিয়া গ্রামের মো. রাকিব হাসান, ঘষিয়াখালী মোস্তফা কামাল, খাউলিয়ার গফফার হাওলাদার, বারইখালী সোহেল শেখসহ একাধিক ভুক্তভোগী গ্রামবাসী বলেন, “সরকারিভাবে পুকুরগুলো সংস্কার করে পর্যাপ্ত পিএসএফ নির্মাণ করা হলে গ্রামবাসীদের সুপেয় পানির আর অভাব হবে না। সরকারের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের প্রতি জোর দাবি, খাবার পানি উপযোগী ব্যক্তিমালিকানা পুকুর ও খাস পুকুরগুলো সংস্কার করার।”
মোরেলগঞ্জ উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মো. মনিরুল ইসলাম জানান, “উপজেলায় খাবার পানি উপযোগী শতাধিক খাস পুকুর রয়েছে। ইতোমধ্যে ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে জেলা পরিষদ থেকে ৫০টি পুকুর সংস্কার ও ৩০টি সৌর চালিত পিএসএফ নির্মাণ করা হয়েছে। নতুন করে শতাধিক পিএসএফ নির্মাণের চাহিদা দেওয়া হয়েছে। তবে খাবার পানি সংকট লাঘবের জন্য বিকল্প ব্যবস্থায় বৃষ্টির পানি ধরে রাখার জন্য ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার পানির ট্যাংকি বিতরণ করা হয়েছে।”
একুশে সংবাদ/এ.জে