মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে শেভরন বাংলাদেশের কনডেনসেট পাইপলাইনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন বাবা বশির মিয়া (৫৪) ও ছেলে রেজোয়ান মিয়া (২১)। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন বশিরের স্ত্রী ফারজানা আক্তার পারভীন (৩৬)। তিনি বর্তমানে ঢাকার বার্ন ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে ভর্তি আছেন।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভোর সাড়ে ৬টার দিকে বশির মিয়া এবং এর আগে শুক্রবার রাত ৩টার দিকে ছেলে রেজোয়ান ঢাকার জাতীয় বার্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য সালেক মিয়া।
এর আগে ২৩ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে উপজেলার ভুনভীর ইউনিয়নের শাসন ইলাম পাড়ায় শেভরনের কনডেনসেট পাইপলাইনে দুর্বৃত্তদের অবৈধ ছিদ্রের কারণে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে একই পরিবারের তিনজন দগ্ধ হন।
স্থানীয়রা জানান, পাইপ থেকে বের হওয়া কনডেনসেট ছড়ার পানিতে মিশে যায়। পরে পানির ওপর ভাসমান তেলে আগুন ধরে গেলে ওই পরিবারের তিনজন গুরুতর দগ্ধ হন।
শেভরন বাংলাদেশের মিডিয়া ও যোগাযোগ ব্যবস্থাপক শেখ জাহিদুর রহমান বলেন, দুর্বৃত্তরা পাইপলাইনে ছিদ্র করে তেল চুরির চেষ্টা চালায়। এতে তেল ছড়িয়ে পড়ে এবং পানির ওপর ভাসমান তেল থেকে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। তিনি আরও জানান, শেভরনের পক্ষ থেকে দগ্ধদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুইজনের মৃত্যুর ঘটনায় শেভরন গভীর শোক প্রকাশ করছে এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী লুৎফুল হক লোকমান বলেন, “শেভরনের পাইপলাইনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি অসচ্ছল এ পরিবারকে শেভরন ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।”
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইসলাম উদ্দিন বলেন, “শেভরনের পাইপলাইনে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ বাবা-ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। শেভরন ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। নিহতদের পরিবারকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।”
এদিকে এ মর্মান্তিক ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
একুশে সংবাদ/এ.জে