দক্ষিণ আফ্রিকায় যাওয়ার জন্য দালালের খপ্পরে পড়ে চার বছর ধরে ভারতের কারাগারে বন্দি রয়েছে বাংলাদেশের তিন কিশোর। ভারতের উত্তর প্রদেশের লখনৌ কারাগারে তাদের রাখা হয়েছে বলে দাবি করেছেন স্বজনরা। বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা করেও দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব না হওয়ায় এখন চরম উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন তারা।
ভারতের কারাগারে বন্দি তিন কিশোর হলেন— মাদারগঞ্জ উপজেলার জোনাইল পক্ষীমারী এলাকার মো. সোনা মন্ডলের ছেলে মেহেদি (১৯), মো. জয়নাল মিয়ার ছেলে মমিন (১৮) এবং মো. রেজাউল করিমের ছেলে শাওন (১৬)।
স্বজনরা জানান, ২০২১ সালে একই গ্রামের দুই মানবপাচারকারী দালাল কম খরচে দক্ষিণ আফ্রিকায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে প্রত্যেকের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে তারা ওই তিন কিশোরকে ভারতে নিয়ে গিয়ে জাল আধার কার্ড, ভুয়া পাসপোর্ট, ভোটার কার্ড ও ব্যাংক হিসাব তৈরি করে ভারতীয় নাগরিক সাজিয়ে লখনৌ পর্যন্ত নিয়ে যায়। সেখানে পৌঁছালে ২০২১ সালের ২৭ অক্টোবর লখনৌ পুলিশ তাদের আটক করে। এ সময় তিনটি ভুয়া পাসপোর্ট, তিনটি আধার কার্ড, তিনটি ভোটার কার্ড ও ১২টি এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়। তবে স্থানীয় দালালরা পালিয়ে যায়।
আটক শাওনের বাবা রেজাউল করিম বলেন, “আমার ছোট ছেলেটা কিছুই বুঝে নাই। প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে সব করেছে দালালরা। পরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হলেও দালালরা কৌশলে দক্ষিণ আফ্রিকা পালিয়ে যায়। আমরা কোনো বিচারও পাচ্ছি না।”
আটক মেহেদীর বাবা সোনা মন্ডল বলেন, “আমরা গরিব মানুষ। শেষ সম্বল বিক্রি করে ছেলেকে বিদেশে পাঠাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দালালরা মিথ্যা প্রলোভনে ভারতে নিয়ে গিয়ে সর্বনাশ করেছে। এখন অনেক চেষ্টা করেও তাদের জামিন বা মুক্তি কিছুই করতে পারি নাই।”
মাদারগঞ্জ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শওকত আলী বলেন, “তাদের মুক্তির ব্যাপারে বিজিবি, ভারতীয় দূতাবাসসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বারবার আবেদন করেছি। কিন্তু এখনো মুক্তি মিলছে না। আমরা তিন কিশোরের দ্রুত মুক্তি চাই।”
এ বিষয়ে জানতে মাদারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল্লাহ সাইফের অফিসিয়াল মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
একুশে সংবাদ/জা.প্র/এ.জে