মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার সদর জায়ফরনগর ইউনিয়নের এক অসহায় দুঃস্থ মহিলার ভিজিডি (VGD) কার্ডের চাল অন্যজনকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) জুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে জায়ফরনগর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের নিশ্চিতপুর গ্রামের সুদীপ চন্দ্র দাশের স্ত্রী অর্পনা রানী দাস এ বিষয়ে অভিযোগ জানান।
জুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাবলু সূত্রধর অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, সরেজমিন তদন্তের পর দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
লিখিত অভিযোগ অনুযায়ী, ইউনিয়ন পরিষদের ভিজিডি (VGD) চাল, যা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর পরিচালিত সরকারের খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি (VWB) অধীনে বিতরণ করা হয়, দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের জন্য প্রদান করা হয়। জায়ফরনগর ইউনিয়নের নিশ্চিতপুর গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা অর্পনা রানী দাস কার্ড পাওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে ১০ সেপ্টেম্বর স্থানীয় ইউপি সদস্য আজাদ মিয়া তাকে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিডব্লিউবি কার্ড (নং-৪৯) হাতে তুলে দেন।
তবে পরে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব রঞ্জন রায় ও স্থানীয় ইউপি সদস্য কার্ডটি জোরপূর্বক নিয়ে নেন। এরপর তারা কার্ডে থাকা অর্পনা রানীর ছবি মুছে অন্য মহিলার ছবি যুক্ত করেন এবং নাম ও স্বামীর জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর পরিবর্তন করে ভোক্তভোগী মহিলার ২ মাসের মোট ৬০ কেজি চাল অন্য মহিলাকে প্রদান করেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী মহিলা ইউপি সদস্য ও সচিবের সঙ্গে বহুবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও প্রতিকার পাননি। ইউপি চেয়ারম্যান মাসুম রেজার সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ভিডব্লিউবি কার্ডের মাধ্যমে চাল পাওয়ার জন্য অর্পনা রানী দাস ডাচ্ বাংলা ব্যাংকে চারশত চল্লিশ টাকা জমা দিয়েছেন। তার প্রাপ্য চাল অন্য মহিলাকে দেওয়ার বিষয়টি তিনি মহিলা বিষয়ক অফিসকে অবহিত করেছেন।
জুড়ী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, অর্পনা রানী দাসের নাম ভিজিডি কার্ডের সরকারি তালিকায় রয়েছে এবং তার কার্ডে ছবি সংযুক্ত আছে। দায়িত্বরত কর্মকর্তা মোঃ সুজাউদ্দৌলা বলেন, “জায়ফরনগর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের অর্পনা রানী দাসের নাম তালিকায় রয়েছে। তার কার্ডের চাল অন্য কাউকে দেওয়ার কোনো ক্ষমতা নেই।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আজাদ মিয়াকে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
সচিব রঞ্জন রায় অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “অর্পনা রানী নামে তিনজন মহিলা ছিলেন। যাকে দিতে চেয়েছিলাম তার নাম না আসায় অন্য মহিলাকে কার্ড দেয়া হয়েছে। সংশোধনের পর কার্ড বাতিল করা হবে।”
চেয়ারম্যান মাসুম রেজা বলেন, “এটি একটি ভুল বুঝাবুঝি। ২–৩ দিনের মধ্যে এর সমাধান হবে।”
উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাবলু সূত্রধর জানান, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একুশে সংবাদ/মৌ.প্র/এ.জে