ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ৫নং বিরুনীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সামছুল হোসাইন অভিযোগ করেছেন, তাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও কিছু অনলাইন পোর্টালে বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। এ বিষয়ে ১০ (সেপ্টেম্বর) বুধবার সকালে ভালুকায় সেভেন স্টার হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে তিনি সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে চেয়ারম্যান সামছুল হোসাইন বলেন,“গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে আমাকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার ও প্রকাশ করা হচ্ছে। এতে জনমনে ভুল ধারণা সৃষ্টি হতে পারে। বিষয়টির সঠিক ব্যাখ্যা জনগণের সামনে তুলে ধরা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।”
তিনি জানান, "বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই তিনি সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। গত ৫ আগস্টের গণআন্দোলনের পর যখন দেশের বেশির ভাগ চেয়ারম্যান দায়িত্ব এড়িয়ে চলছিলেন, তখন তিনি জনগণের পাশে থেকে ইউনিয়নের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।"
চেয়ারম্যান সামছুল হোসাইন বলেন, "সম্প্রতি ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয় যেখানে দেখা যায়, একটি কক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ছবি টানানো রয়েছে। কিন্তু কক্ষটি ইউনিয়ন পরিষদের কোনো কক্ষ নয়, বরং ভবনের একটি অব্যবহৃত রুম যা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার নামে বরাদ্দকৃত।"
তিনি দাবি করেন, “ওই কক্ষের কোনো চাবি আমার কাছে নেই কিংবা আমার কোনো ইউপি সদস্যের কাছেও নেই। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এ বিষয়ে কোনো সত্যতা পায়নি।”
তিনি আরও বলেন, "সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার কিছু ছবিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। একটি ছবিকে সাবেক সাংসদ এমএ ওয়াহেদের নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে দাবি করা হলেও বাস্তবে তা ছিল একটি রাস্তা উদ্বোধনের ছবি, যেখানে এমএ ওয়াহেদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।"
সংবাদ সম্মেলনে তিনি স্পষ্টভাবে জানান, “আমার আপন মামা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ। এটি একটি পারিবারিক বন্ধন, তবে রাজনৈতিক অবস্থান ভিন্ন। আমি ছাত্রজীবন থেকেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। বর্তমানে আমি বিএনপির অঙ্গসংগঠন জাসাস কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি।”।”
তিনি অভিযোগ করেন, "কিছু মহল তাকে আওয়ামী দোসর সাজানোর চেষ্টা করছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এটি প্রতিপক্ষের হীনমন্যতা ও অপপ্রচার ছাড়া কিছু নয়, বলেন তিনি।"
চেয়ারম্যান সামছুল হোসাইন বলেন, "নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সময় যেমন শুভাকাঙ্ক্ষী ছিল, তেমনি প্রতিপক্ষও ছিল। আবার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিয়ম-কানুন মেনে চলায় সবার প্রত্যাশা পূরণ করা সম্ভব হয়নি। তাই কেউ কেউ ক্ষুব্ধ হয়ে থাকতে পারেন। তবে এটিই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য যেখানে মত প্রকাশের অধিকার সবার রয়েছে।"
সংবাদ সম্মেলনের শেষে তিনি বলেন, “জনগণকে আমি অনুরোধ করছি বিভ্রান্ত না হতে। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি আশাবাদী এই ব্যাখ্যার মাধ্যমে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটবে। যারা অপপ্রচার চালাচ্ছেন তারাও নিবৃত হবেন এবং ইউনিয়নের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে আমাকে সহায়তা করবেন।”
একুশে সংবাদ/ম.প্র/এ.জে