ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: ভালুকায় লিটার ব্যবসা ৭০ শতাংশ বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। শনিবার (৩০ আগস্ট) সকালে Uno Bhaluka ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ তথ্য জানান।
ইউএনও বলেন, “রাতে এখনও লিটারের গাড়ি চলাচল করে বলে অভিযোগ আছে। এটি মিথ্যা নয়। লিটারের গাড়ী আমাদের (ওসি, এসিল্যান্ডসহ) পক্ষে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা অনেক অনেক কঠিন। তবে, আপনারা স্বীকার করেন বা না করেন লিটার ব্যবসা ভালুকায় ৭০ শতাংশ বন্ধ হয়েছে। অবশিষ্ট ৩০ শতাংশও অনতিবিলম্বেই বন্ধ হবে ইনশাআল্লাহ।”
তিনি আরও বলেন, এই পরিবর্তন রাতারাতি বা সামান্য পরিশ্রমে আসেনি। এই কাজটিতে সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে তাঁকে। বিভিন্ন ষড়যন্ত্র ও চাপের বিষয় উল্লেখ করে ইউএনও জানান, "জেলার সাংবাদিকদের কাছে তাঁর বিরুদ্ধে সংবাদ করানোর চেষ্টা হয়েছে, তবে উপাদান না থাকায় ব্যর্থ হয়েছে। মন্ত্রণালয়ে বদলির তদবির হয়েছে, কিন্তু সদাসয় সরকার তা করেনি। তাঁকে বদলির জন্য ফান্ড গঠন করা হয়েছে এবং অন্য একজন ইউএনওকে বলা হয়েছে তাকে ভালুকা উপজেলায় আনা হবে, শুধু লিটার ব্যবসায়িদের ছাড় দিতে হবে একটু। এমনকি তাঁর ইউনিয়ন, এমন কি বাড়ির পাশে গিয়েও খোঁজ নেওয়া হয়েছে যে, তাঁর বা তাঁর পরিবারের কোন দোষ ত্রুটি খুঁজে বের করা যায় কিনা। এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া ছবি বানিয়ে প্রচারণারও চেষ্টা চালানো হয়েছে। জেলার শীর্ষ নেতাদের কাছেও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।"
এসব ষড়যন্ত্র ও প্রতিবন্ধকতার পরও তিনি এক মুহূর্তের জন্য পিছপা হননি বলে জানান ইউএনও হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ।
পোস্টে তিনি আরও বলেন, “প্রশাসন নিরব বলা হলে কষ্ট পাই। গত সপ্তাহে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল কাজ ছিলো, যেগুলো শেষ করতে হয়েছে। তবে একদম স্পষ্ট করে বলছি ভালুকায় লিটার বন্ধ হবেই হবে, স্থায়ীভাবেই হবে ইনশাআল্লাহ। উপজেলা প্রশাসন ন্যায়ের প্রশ্নে কাউকে ভয় পায় না, কোন কিছুকেই ভয় পায় না।”
এর পাশাপাশি একই দিনে আরেকটি পোস্টে ইউএনও হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ঘোষণা দেন “অদ্য ৩০ আগস্ট ২০২৫ তারিখ হইতে ভালুকা উপজেলায় দুর্গন্ধযুক্ত, পরিবেশ দূষণকারী মুরগীর বিষ্ঠা তথা লিটারের পরিবহণ, পুকুরে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে সংরক্ষণ কিংবা মাছ চাষে এর ব্যবহার সম্পূর্ণরুপে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। যে বা যারা এটি পরিবহনের সাথে জড়িত থাকবেন তাদেরকে অর্থদণ্ড এবং কারাদণ্ডের আওতায় আনা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “টক্সিনযুক্ত, হেভি মেটালযুক্ত, ক্যান্সারের উপাদান বিশিষ্ট লিটার মাছ চাষে ব্যবহার করা যাবে না, এটাই শেষ কথা।”
স্থানীয়রা মনে করছেন, ইউএনওর এ ঘোষণার ফলে ভালুকায় দীর্ঘদিন ধরে চলমান লিটার ব্যবসার অবসান ঘটবে এবং পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষিত থাকবে।
একুশে সংবাদ/ম.প্র/এ.জে