ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার তিন তরুণ-তরুণী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। ছাত্রসমাজের অধিকার আদায়, নেতৃত্বের যোগ্যতা ও সাহসী চিন্তাধারার কারণে তারা ইতিমধ্যেই ক্যাম্পাসে প্রশংসিত হচ্ছেন।
ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের শালচূড়া গ্রামের আহমেদ হোসেন জনি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী এবং হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের আবাসিক ছাত্র। তিনি ডাকসুর সহসভাপতি (ভিপি) পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী। দীর্ঘদিন শিক্ষাবান্ধব আন্দোলন ও ছাত্রকল্যাণে সক্রিয় ভূমিকার কারণে জনি একজন আত্মবিশ্বাসী ও দায়িত্বশীল প্রার্থী হিসেবে পরিচিত।
উপজেলার সদর এলাকার নাহিদ হাসান ম্যানেজমেন্ট বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং বিজয় একাত্তর হলের আবাসিক ছাত্র। তিনি ডাকসুর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী। সহজ-সরল ভাষায় কথা বলার ক্ষমতা, সংগঠনিক দক্ষতা এবং ন্যায়ের পক্ষে অবিচল অবস্থান তার বিশেষ পরিচিতি।
ঝিনাইগাতী সদরের মেয়ে আরাফাত আক্তার তামান্না ডাকসুর রোকেয়া হল পাঠকক্ষ সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী। তিনি প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের ছাত্রী এবং রোকেয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। জুলাই গণঅভ্যুত্থানসহ বিভিন্ন আন্দোলনে সরব ছিলেন তামান্না। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমি কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না, নেই এবং হবও না। শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি-দাওয়া তুলে ধরার জন্যই আমি প্রার্থী হয়েছি।”
ভিপি পদপ্রার্থী আহমেদ হোসেন জনি বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দখলদারিত্বমুক্ত হল, এক শিক্ষার্থী এক সিট ব্যবস্থা, ন্যায্যমূল্যে মানসম্মত খাবার, সুষ্ঠু পড়াশোনার পরিবেশ ও আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন আবাসিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করাই আমার মূল লক্ষ্য।”
স্থানীয় রাজনৈতিক ও শিক্ষাবিদরা মনে করছেন, ভারতসীমান্ত ঘেঁষা প্রান্তিক উপজেলার এই তিন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ শুধু ব্যক্তিগত গৌরব নয়, বরং এলাকার জন্যও এক বিশেষ সম্মান।
ঝিনাইগাতীর বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ রবেতা ম্রং বলেন, “ডাকসু নির্বাচনে আমাদের তিন মেধাবী শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ সত্যিই গর্বের বিষয়। তারা জয়ী হলে শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্ব নয়, ভবিষ্যতে দেশেরও নেতৃত্বে অবদান রাখবে।”
ঝিনাইগাতীর এই তিন তরুণ-তরুণী প্রমাণ করেছেন, মফস্বল থেকেও মেধা, সততা ও নেতৃত্বগুণের মাধ্যমে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে জায়গা করে নেওয়া সম্ভব। এলাকার মানুষের প্রত্যাশা, জয়ী হয়ে তারা সাধারণ শিক্ষার্থীর অধিকার ও স্বপ্ন পূরণে অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন।
একুশে সংবাদ/শে.প্র/এ.জে
একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
