AB Bank
  • ঢাকা
  • বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫, ১২ ভাদ্র ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

সহীহ আকীদা ও আমলের প্রচারকেন্দ্র দক্ষিণ কাঞ্চননগরের খাদেমুল ইসলাম মাদরাসা


Ekushey Sangbad
আসগর সালেহী, চট্টগ্রাম
১২:১০ পিএম, ২৭ আগস্ট, ২০২৫

সহীহ আকীদা ও আমলের প্রচারকেন্দ্র দক্ষিণ কাঞ্চননগরের খাদেমুল ইসলাম মাদরাসা

একসময় ফটিকছড়ি উপজেলার দক্ষিণ কাঞ্চননগর এলাকায় কওমি মাদরাসা তথা মাসলাকে দেওবন্দের বিপরীতে ছিলেন স্থানীয় অনেক মানুষ। কিন্তু শত প্রতিকূলতা ও বাধা উপেক্ষা করে ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ আল্লামা হাফেজ ক্বারি শাহ মুহাম্মদ শামসুদ্দিন (রহ.)-এর নিরলস প্রচেষ্টায় ‘খাদেমুল ইসলাম মাদরাসা’র অগ্রযাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে সেই সংঘাতময় পরিস্থিতি কেটে গেছে। বৈপরীত্য ভুলে স্থানীয়রা আজ তাদের ছেলে-মেয়েদের কোরআনের হাফেজ ও দ্বীনের রাহবার হিসেবে গড়ে তুলতে এ মাদরাসায় ভর্তি করছেন।

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকা দক্ষিণ কাঞ্চননগরে ১৯৯৫ সালে মাদরাসাটির যাত্রা শুরু হয়। হাটহাজারী মাদরাসার মুহতামিম হযরত আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.), পটিয়া মাদরাসার সাবেক শাইখুল হাদিস হযরত আল্লামা মুহাম্মদ ইসহাক গাজী (রহ.), প্রাক্তন মুহতামিম হযরত আল্লামা মুহাম্মদ হারুন ইসলামাবাদী (রহ.), ঢাকা বসুন্ধরা ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আল্লামা মুফতি আব্দুর রহমান (রহ.) প্রমুখ শীর্ষ ওলামায়ে কেরামের দিকনির্দেশনা ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নাজিরহাট বড় মাদরাসার সাবেক মুহতামিম ও ইসলামী চিন্তাবিদ আল্লামা হাফেজ ক্বারি শাহ মুহাম্মদ শামসুদ্দিন (রহ.)-এর অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

প্রথমে ফোরকানিয়া বিভাগ দিয়ে শুরু হলেও বর্তমানে এখানে নাজেরা, নূরানি, হিফজ, মুতাফাররাকা, জামাতে ছাহারুম (অষ্টম শ্রেণি) পর্যন্ত এবং অনাবাসিক বালিকা শাখায় কিতাব বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে। বর্তমানে ১৪ জন শিক্ষক মণ্ডলীর তত্ত্বাবধানে প্রায় ২৭০ জন ছাত্র-ছাত্রী দ্বীনি শিক্ষারত রয়েছে। পাশাপাশি এখানে হেফজখানা ও এতিমখানাও চালু রয়েছে।

খাদেমুল ইসলাম মাদরাসার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো নারী শিক্ষার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব। বালিকা শাখার মাধ্যমে মেয়েদের জন্য দ্বীনি শিক্ষার সুব্যবস্থা করা হয়েছে। এ উদ্যোগ স্থানীয় নারীদের মধ্যে ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে। আগে যেখানে নারীদের জন্য দ্বীনি শিক্ষার তেমন সুযোগ ছিল না, সেখানে আজ অনেকেই তাদের কন্যাদের এই মাদরাসায় ভর্তি করাচ্ছেন। ভবিষ্যতে বালিকা শাখার জন্য আলাদা তিন তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানের একমাত্র আয়ের উৎস হলো স্থানীয় ও বহিরাগত দ্বীনপ্রাণ মুসলমানদের এককালীন দান, মাসিক চাঁদা, সদকা, যাকাত, ফিতরা ও কাফফারা। মাদরাসার বার্ষিক বাজেট প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ লাখ টাকা। বর্তমান মুহতামিম হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ ইসমাইল এবং ভারপ্রাপ্ত মুহতামিম মাওলানা মোহাম্মদ আবু ইউছুফ নছীরির নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানটি এগিয়ে যাচ্ছে।

প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, মাদরাসার জামে মসজিদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার কাজ দ্রুত শেষ করা হবে। তিন তলা বিশিষ্ট নতুন শিক্ষাভবন, দারুল মুতালায়া (মানসম্পন্ন লাইব্রেরি), বালিকা শাখার জন্য আলাদা তিন তলা ভবন এবং চক্ষু ও দাতব্য চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনাও হাতে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া জমি ক্রয় করে বড় পুকুর খননের কাজও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত।

শিক্ষা ও মানবিক খেদমতের এ ধারাবাহিক প্রচেষ্টা ইতোমধ্যেই ওলামায়ে কেরাম ও দ্বীনদার বুদ্ধিজীবীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। স্থানীয়রা আশা করছেন, খাদেমুল ইসলাম মাদরাসা আগামী দিনে আরও বড় পরিসরে সহীহ দ্বীনের আলো ছড়িয়ে দেবে।

মাদরাসার বর্তমান মুহতামিম হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন—“দ্বীনি শিক্ষা ছাড়া মুসলমানদের কোনো প্রকৃত উন্নতি সম্ভব নয়। আমাদের সন্তানদেরকে কোরআন-হাদিসের আলোকে গড়ে তুলতে হবে, যাতে তারা দ্বীন ও দুনিয়া উভয় দিকেই সফল হতে পারে। খাদেমুল ইসলাম মাদরাসা প্রতিষ্ঠার পর থেকে নিরলসভাবে কোরআন-হাদিসের খেদমত করে আসছে। বর্তমানে ২৭০ জনের বেশি ছাত্র-ছাত্রী এখানে দ্বীনি শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিকতার শিক্ষা গ্রহণ করছে—এটি আমাদের সমাজ ও জাতির জন্য বড় আশার কথা।

কিন্তু শুধুমাত্র দ্বীনপ্রাণ মুসলিম ভাই-বোনদের দান, যাকাত, ফিতরা ও সদকা দিয়েই এ প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়। বার্ষিক প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ লাখ টাকার বাজেট আমাদের বহন করতে হয়। তাই আমি বিনীতভাবে আহ্বান জানাই—আপনারা যে যেভাবে পারেন এ প্রতিষ্ঠানের পাশে দাঁড়ান। বিশেষ করে মসজিদ, শিক্ষাভবন ও বালিকা শাখার নতুন বিল্ডিং নির্মাণে আপনাদের আন্তরিক সহযোগিতা জরুরি। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রয়াস কবুল করুন এবং আমাদের সন্তানদের প্রকৃত দ্বীনি রাহবার হিসেবে গড়ে তুলুন।”

 

একুশে সংবাদ/চ.প্র/এ.জে

সর্বোচ্চ পঠিত - সারাবাংলা

Link copied!