দেশের সবচেয়ে ব্যস্ত সড়ক ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে রাতভর দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার (২৫ আগস্ট) রাত থেকে শুরু হওয়া এই পরিস্থিতি মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সকালে আরও তীব্র আকার ধারণ করে। তবে দুপুর নাগাদ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে থাকে যান চলাচল।
পুলিশ জানায়, সোমবার গভীর রাতে কুমিল্লার দাউদকান্দি এলাকায় একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ে। দুর্ঘটনার পর সেটি সড়কের মাঝখানে আটকে থাকায় মহাসড়কে গাড়ির সারি দীর্ঘ হতে থাকে। এর কিছুক্ষণ পর মেঘনা সেতুর কাছে আরেকটি ট্রাক দুর্ঘটনার কবলে পড়লে যানজট আরও ভয়াবহ রূপ নেয়।
ফলে রাতভর সাইনবোর্ড থেকে শুরু করে দাউদকান্দি পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকায় যান চলাচল একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। শত শত ট্রাক, বাস ও ব্যক্তিগত গাড়ি আটকে পড়ায় যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছায়।
শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ জুলহাস উদ্দিন জানান, রাতের দুর্ঘটনার পর একাধিক টিম উদ্ধারকাজে নামে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত যানবাহন সরিয়ে ফেলা হয়েছে এবং বর্তমানে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে।
মঙ্গলবার সকালে আটকে থাকা যাত্রীদের দুর্দশা ছিল প্রকট। ঘণ্টার পর ঘণ্টা এক জায়গায় বসে থেকে নারী, শিশু ও বৃদ্ধ যাত্রীরা পানীয় জল ও খাবারের সংকটে পড়েন।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী যাত্রী সেলিম মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সকাল ৬টায় বাসে উঠেছি, ৯টা পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটারও যেতে পারিনি। শেষে বাধ্য হয়ে নেমে হেঁটে যেতে হয়েছে।”
অন্য যাত্রী নাসরিন আক্তার বলেন, “ছোট বাচ্চাকে নিয়ে সারা রাত গাড়ির ভেতর বসে থাকতে হয়েছে। গরমে শিশুটি কাঁদতে কাঁদতে হাঁপিয়ে উঠেছে।”
শুধু যাত্রী নয়, দীর্ঘ যানজটে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ব্যবসায়ীরাও। সোনারগাঁওয়ের ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, “এ ধরনের যানজটে আমাদের পণ্য বাজারে পৌঁছাতে দেরি হয়, ক্রেতারাও আসে না। এতে ব্যবসায়িক ক্ষতি হয় প্রায়ই।”
ট্রাফিক পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটলে একই চিত্র দেখা যায়। বিকল্প কোনো রুট না থাকায় সামান্য দুর্ঘটনাই ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্থবিরতা তৈরি করে। এর সঙ্গে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উন্নয়নকাজ চলমান থাকায় সেখানে চাপ বেড়ে যায় এবং যাত্রীদের ভোগান্তি বহুগুণে বাড়ে।
একুশে সংবাদ/এ.জে