যশোরের অভয়নগরের বিভিন্ন বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচের দাম লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেগুন, টমেটো, বরবটি, লাউসহ অন্যান্য সবজির দামও খুচরা বাজারে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
ব্যবসায়ীরা দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে অতিবৃষ্টিতে উৎপাদন ও সরবরাহ কমে যাওয়াকে দায়ী করছেন। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়ানো হচ্ছে।
রবিবার (২৪ আগস্ট) উপজেলার নওয়াপাড়া ও আশপাশের বাজার ঘুরে দেখা যায়, পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। এছাড়া বেগুন ১২০ থেকে ১৫০, ওল ৮০ থেকে ১০০, করলা ৮০ থেকে ১০০, বরবটি ৬০ থেকে ৮০, লাউ প্রতিটি ৭০ থেকে ১০০, পটল ৫০ থেকে ৬০, ঝিঙে ৮০ থেকে ১০০, মিষ্টি কুমড়া ৫০ থেকে ৬০, রসুন ১০০ থেকে ১২০ এবং আলু ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বিক্রেতাদের দাবি, আড়ৎ থেকেই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
সবচেয়ে বেশি বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি ১৫০ টাকায় বিক্রি হওয়া মরিচ বর্তমানে বাজারে ২৪০ থেকে ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজির পাশাপাশি মাছ, মাংস ও ডিমের দামেও ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে। গত সপ্তাহে বয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, বর্তমানে তা বেড়ে ১৮০ টাকায় পৌঁছেছে। সোনালী ও দেশি মুরগির দামও বেড়েছে। ডিমের প্রকারভেদে প্রতি ডজনে ১০ থেকে ১৮ টাকা পর্যন্ত দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
মাছের বাজারে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। একসময় গরিবের মাছ হিসেবে পরিচিত পাংগাশ এখন বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়। এক কেজি ওজনের রুই বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৩৭০ টাকায়। পাশাপাশি বাটা, কাতলা, তেলাপিয়া, মৃগেলসহ প্রায় সব মাছের দাম বেড়েছে।
মাছ কিনতে আসা সোহাগ নামের এক ক্রেতা বলেন, “এভাবে মাছের দাম বাড়তে থাকলে আমাদের মাছ না খেয়েই থাকতে হবে।” তবে সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানোর অভিযোগ অস্বীকার করে নওয়াপাড়া বাজারের মাছের আড়তদার কামরুজ্জামান বলেন, “অধিকাংশ মাছের ঘের ডুবে যাওয়ায় উৎপাদন ও সরবরাহ কমে গেছে, এজন্য দাম বেড়েছে।”
অধিকাংশ ক্রেতার অভিযোগ, কার্যকর মনিটরিং না থাকায় আড়ৎ থেকে খুচরা পর্যন্ত দামের ব্যাপক পার্থক্য তৈরি হচ্ছে। এতে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়ে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে।
অভয়নগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন বলেন, “জলাবদ্ধতা ও অতি বৃষ্টিতে উপজেলার প্রায় ৭০ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে সবজির উৎপাদন ও সরবরাহ কমেছে। তবে বৃষ্টি কমে গেলে সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছি।”
একুশে সংবাদ/য.প্র/এ.জে