‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে নওগাঁর মান্দা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহীদ রাসেলের কবর জিয়ারত, দোয়া মাহফিল ও শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের মাধ্যমে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) সকালে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আখতার জাহান সাথী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মান্দা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার জাকিরুল ইসলাম, মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুনসুর রহমান, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নুরুজ্জামান, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. শাকিল আহমেদসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
কর্মসূচির শুরুতেই শহীদ রাসেলের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনায় মিলাদ ও বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইতিহাসের এই গুরুত্বপূর্ণ দিনটিকে স্মরণে রেখে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতেই প্রতিবছর যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করা হয়। এর আগে জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে ‘এক শহীদ, এক বৃক্ষ’ শীর্ষক বিশেষ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিও পালন করা হয়েছে।
গত ১৯ জুলাই বিকেলে উপজেলার কশব ভোলাগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে শহীদ রাসেল রানার স্মরণে একটি জারুল গাছের চারা রোপণ করা হয় এবং তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। শহীদ রাসেলের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হয়ে চারাটি রোপণ করেন মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আখতার জাহান সাথী। উপজেলা প্রশাসন ও রাজশাহী সোশ্যাল ফরেস্ট্রি প্ল্যানটেশন সেন্টার (এসএফপিসি) যৌথভাবে এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
সে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ, নজরুল ইসলাম, উপজেলা বন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) দেবাশিষ দে, কশব ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক কামরুল আরেফিন, বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহিদা খাতুন, উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা আরাফাত হোসেন, শহীদ রাসেলের পিতা পিন্টু রহমানসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আখতার জাহান সাথী বলেন, “শহীদের আত্মত্যাগ স্মরণে প্রতীকী বৃক্ষরোপণের পাশাপাশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে ৫০০টি বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা বিতরণ করা হয়েছে। গাছের সঙ্গে শহীদের জীবনকথা জানাতে ছজ কোড যুক্ত নামফলকও সংযুক্ত করা হয়েছে, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গাছের পরিচর্যার পাশাপাশি শহীদের আত্মত্যাগ সম্পর্কেও জানতে পারে।”
প্রসঙ্গত, শহীদ রাসেল রানা (২০) কশব ভোলাগাড়ী গ্রামের পিন্টু রহমানের ছেলে। তিনি নারায়ণগঞ্জের একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় নারায়ণগঞ্জ শহরে পুলিশের গুলিতে আহত হন তিনি এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২২ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেন। পরে তাঁকে শহীদ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে গেজেট নম্বর ২৭২ প্রকাশ করে সরকার।
একুশে সংবাদ/ন.প্র/এ.জে