জীবিকার তাগিদে প্রায় তিন বছর আগে ভারত গিয়েছিলেন ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার রুহিয়া মানিক খাড়ি এলাকার বাসিন্দা মো. মিঠুন (২২)। প্রথমদিকে সবকিছু স্বাভাবিক থাকলেও হঠাৎ করে পরিবারের সঙ্গে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। আজ মঙ্গলবার সকালে তার পরিবারের কাছে একটি ভিডিও আসে, যেখানে দেখা যায় মিঠুনকে অমানবিকভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। একইসঙ্গে অপহরণকারীরা ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে।
মিঠুনের বাবা আব্দুর রউফ জানান, “আমার ছেলে ভারতের পাঞ্জাবে একটি ইটভাটায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতো। কয়েক দিন ধরে তার সঙ্গে আমাদের কোনো যোগাযোগ নেই। আজ সকালে একটি অচেনা ভারতীয় নম্বর থেকে ফোন আসে। ফোনে বলা হয়, ২ লাখ টাকা না দিলে মিঠুনকে মেরে ফেলা হবে। এত টাকা কোথা থেকে আনবো জানি না। আমি শুধু আমার ছেলেকে ফিরে পেতে চাই।”
স্থানীয় বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম বলেন, “অপহরণকারীরা বাংলায় কথা বলছিল, যা দেখে ধারণা করছি তারা বাংলাদেশি। তারা ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে। কিন্তু পরিবারের পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়। সরকারের কাছে অনুরোধ, যেন দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে তাকে উদ্ধারের ব্যবস্থা করা হয়।”
মিঠুনের মা আয়েশা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার ছেলেকে যেভাবেই হোক দেশে ফিরিয়ে দিন। ভিডিওতে মিঠুনকে খুব ভীতসন্ত্রস্ত দেখা গেছে।” তিনি আরও জানান, অপহরণকারীদের সঙ্গে হরিপুর উপজেলার কয়েকজন যুবক জড়িত থাকতে পারে এবং তারা ভারতের কাশ্মীর অংশে কাজ করতেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে এখনো তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
অপহৃত মিঠুনকে উদ্ধারে পরিবারের পক্ষ থেকে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
হরিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকারিয়া মন্ডল বলেন, “বিষয়টি প্রাথমিকভাবে জেনেছি। এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হবে। এতে বাংলাদেশের কেউ জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
একুশে সংবাদ/ঠা.প্র/এ.জে