নওগাঁর মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে গিয়ে স্থানীয় এক শিক্ষক দম্পতি কর্তব্যরত চিকিৎসক, ওয়ার্ডবয় ও অ্যাম্বুলেন্স চালকসহ মোট পাঁচজনের হাতে শারীরিক লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (১ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
ভুক্তভোগী শিক্ষক দম্পতি হলেন স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষক তাজিবুল হক এবং তাঁর স্ত্রী, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা নাজনীন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের ভাষ্য অনুযায়ী, তাজিবুল হক তার রক্তচাপ পরিমাপ করাতে স্ত্রীকে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে যান। সেখানে তাঁরা দেখতে পান, কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রিফাত বিনতে জান্নাত লিয়া এক রিপ্রেজেন্টেটিভের সঙ্গে চেম্বারে গল্পে মগ্ন। তখন তাঁরা ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে বাধা দেওয়া হয়।
এই অনিয়মের প্রতিবাদে শিক্ষক দম্পতি একটি ছবি তোলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ডা. লিয়া ওয়ার্ডবয় বাপ্পী, নাজমুল, সোহেল এবং অ্যাম্বুলেন্স চালক ইমনকে ডেকে আনেন। অভিযোগ অনুযায়ী, তারা সবাই মিলে শিক্ষক দম্পতিকে টেনে-হিঁচড়ে জরুরি বিভাগের ভেতরে নিয়ে গিয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।
পরে ঘটনাস্থলে আসেন ডা. লিয়ার স্বামী তামিম এবং মান্দা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাবেক টিএইচএ ডা. বিজয় কুমার রায়। অভিযোগ রয়েছে, তারা ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষক দম্পতির অভিযোগ না শুনেই রূঢ় ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন।
এই ঘটনার ভিডিও ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষ, শিক্ষক সমাজ এবং সচেতন মহলের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। তারা অভিযুক্তদের অপসারণ ও শাস্তির দাবি জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তাসনিম হোসাইন আরিফ বলেন, "ঘটনার বিষয়ে আমরা অবগত হয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"
এদিকে স্থানীয় শিক্ষক, নাগরিক সমাজ ও সামাজিক সংগঠনগুলো ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেছেন, “বিচার না হলে আমরা প্রতিবাদ কর্মসূচিতে নামতে বাধ্য হব।”
একুশে সংবাদ/ন.প্র/এ.জে