নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বিএনপির পার্টি অফিস হিসেবে ব্যবহার হওয়া দোকানের ভাড়া চাওয়ায় মো. জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া (৫৭) নামের এক দোকান মালিককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
নিহত জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া মাহমুদপুর ইউনিয়নের মৃত তালেব আলী ভূঁইয়ার ছেলে। এ ঘটনায় মাহমুদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তোতা মেম্বারসহ ১২ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ করেছেন নিহতের ছেলে রাসেল। অভিযুক্তরা বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-অর্থবিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমনের অনুসারী বলে তিনি দাবি করেছেন।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া নিজ মালিকানাধীন দোকানঘরের বকেয়া ১০ হাজার টাকা ভাড়া চাইতে গেলে তোতা মেম্বারসহ কয়েকজন তার ওপর চড়াও হন। প্রথমে কথাকাটাকাটি শুরু হলে একপর্যায়ে জাহাঙ্গীর তোতা মেম্বারকে ধাক্কা দেন। এরপর তোতা মেম্বারের অনুসারী ছেলে খোকন, রাসেল, বেনু হাজীর ছেলে আলম (৪৫), সাদ্দাম (৩৫)সহ কয়েকজন মিলে তাকে পার্টি অফিসে নিয়ে গিয়ে মারধর করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় জাহাঙ্গীরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এলাকাবাসীর ভাষ্য মতে, আগামী ৫ আগস্ট বিএনপির একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচিকে সামনে রেখে জাহাঙ্গীরের দোকানটি পার্টি অফিস হিসেবে ভাড়া নিয়েছিলেন তোতা মেম্বার। স্থানীয়ভাবে এটি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মাহমুদুর রহমান সুমনের অফিস নামেই পরিচিত ছিল। ভাড়া চাইতে গেলে তোতা মেম্বার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “বিএনপির অফিসের জন্য আবার ভাড়া কী?”— এই মন্তব্য ঘিরেই সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে।
আড়াইহাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার নাসির উদ্দিন বলেন, “সেখানে কয়েকটি দোকান নিয়ে বিএনপির একটি অফিস গঠন করা হয়েছিল। এর একটি অংশ ছিল জাহাঙ্গীর ভূঁইয়ার। ভাড়া চাইতে গিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে এবং পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।”
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তারা ঘটনাটিকে রাজনৈতিক সহিংসতার ভয়াবহ পরিণতি বলে অভিহিত করেন।
উল্লেখ্য, আড়াইহাজার এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই রাজনৈতিক উত্তেজনা চলছিল। এই হত্যাকাণ্ড নতুন করে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয় প্রশাসন।
একুশে সংবাদ/না.প্র/এ.জে